আয়ের তুলনায় লোকসান বেশি দেখিয়ে ১০ বছর আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানায় বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালের প্রথম ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছরই কোনো আয়কর দেননি ট্রাম্প। এ ছাড়া, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করার পর এবং ২০১৭ সালে হোয়াইট হাউসে আসার পর দুই বছরে মাত্র ৭৫০ ডলার বা প্রায় ৬৪ হাজার টাকা করে আয়কর দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ট্রাম্পের গত দুই দশকের আয়করের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। আয়করের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ব্যাপক অর্থনৈতিক লোকসান দেখিয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, এর মাধ্যমেই বিজনেস-টাইকুন ট্রাম্প তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন।
রোববার হোয়াউট হাউসে ব্রিফিংয়ে তার বিরুদ্ধে করা আয়কর সংক্রান্ত সংবাদকে এবং নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনকে ‘ফেইক নিউজ’ আখ্যা দিয়ে বলে বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আমি ‘প্রচুর পরিমাণে’ আয়কর দিয়েছি।’

একইসঙ্গে জানিয়েছেন, যখন তিনি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সার্ভিসের আওতাধীন থাকবেন না, তখন তিনি তার আয়করের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবেন। তবে, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সার্ভিসের আওতাধীন থাকাকালীন আয়করের তথ্য প্রকাশ না করার বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, একজন ব্যবসায়ী তার ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করছেন এবং লক্ষ লক্ষ টাকার লোকসান দেখাচ্ছেন। অথচ তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করছেন এবং নিজের অর্থনৈতিক সাফল্যের বিষয়ে জানান দিচ্ছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের হাতে থাকা ট্রাম্পের আয়করের বিবরণীতে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের আয়করের তথ্য নেই।
আরও বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে যখন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পেইন করছিলেন, তখনই তিনি নির্বাচনের নিয়ম ভঙ্গ করেছিলেন এবং তার আয়কর রিটার্ন পাবলিক রিভিউয়ের জন্য দিতে অস্বীকার করেছিলেন। ২০১৭ সালে যখন তিনি হোয়াইট হাউসে আসেন, এরপর থেকে তার আয়করের বিষয়টি গোপন রেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সার্ভিসের আওতাধীন থাকার মানে এই নয় যে কেউ তার আয়কর রিটার্ন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে পারবে না।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম দুই বছর ট্রাম্প ৭৩ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করেছেন বলেও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।