চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

লেড এসিড ব্যাটারির পরিবেশভিত্তিক সঠিক ব্যবস্থাপনার তাগিদ

স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি ও পরিবেশ দূষণ রোধে সরকারের উচিত ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারির পরিবেশভিত্তিক সঠিক ব্যবস্থাপনা করা এবং এর অননুমোদিত পুনর্ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো), ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম এবং ইন্টারন্যাশসাল লেড এ্যাসোসিয়েশন- আইএলএ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত একটি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ তাগিদ দেন।

পিওর আর্থ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের তথ্য আনুসারে দেশে এখন পর্যন্ত ২৭০ টি এলাকায় লেড এসিড ব্যাটারির রিসাইক্লিং করা হয়। যার ফলে ইক্ত এলাকার বাসিন্দারা সীসা দ্বারা সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সীসা এক্সপোজার থেকে অর্থনৈতিক প্রভাবগুলির একটি গবেষণা অনুমান করে যে প্রতি বছর বাংলাদেশ জিডিপিতে ১৫.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হ্রাস পায় যা জনগণের আজীবন আয়ের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

এসডোর চেয়ারপার্সন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, বর্তমান সরকারের উচিত ব্যবহৃত লেড এ্যাসিড ব্যাটারির নিয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করা। এসডো অনানুষ্ঠানিক ছোট ক্ষেত্রগুলো আইনের আওতায় আনার জন্য সব ধরণের সাহায্য করতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশে ব্যবহৃত লেড এ্যাসিড ব্যাটারির অব্যবস্থাপনা বন্ধ করতে এবং এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে উক্ত কর্মশালায় একটি দশ-পদক্ষেপ বিশিষ্ট কৌশল উপস্থাপন করা হয়েছে। এই কৌশলটির মূল উদ্দেশ্য হলো, ব্যবহৃত লেড এ্যাসিড ব্যাটারির আনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রগুলোকে যথাযথভাবে রিসাইক্লিং এর প্রক্রিয়ায় আওতাভুক্ত করা।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এর অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুর রহমান বলেছেন, ’স্বাস্থ্য সকল মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং তা রক্ষা করা অধিকতর গুরুত্বের কাজ। লেড এ্যাসিড ব্যাটারির অনানুষ্ঠানিক রিসাইক্লিং ব্যবস্থাপনা বিশেষত বাচ্চাদেরকে বেশি প্রভাবিত করে থাকে। যারা রিসাইক্লিং কাজের সাথে জড়িত তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। তাই তাদের কল্যাণে আলোচ্য সমস্যা দূর করতে একত্রে কাজ করা উচিত।’

বাসেল, রটরডেম এবং স্টকহোম কনভেনশনের প্রোগ্রাম অফিসার ফ্রানস্সিকা সেন্নি এর মতে, বাংলাদেশ যদি ব্যবহৃত লেড এ্যাসিড ব্যাটারির ব্যবস্থাপনায় পরিবেশগত মাস সুনিশ্চিত না করতে পারে তাহলে তা জনগণের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি কেরতে পারে।

আইসিডিডিআর,বি (২০২০) এর একটি গবেষণার প্রকাশিত হয়েছে যে, প্রায় অর্ধশত শিল্পের সীসা সরবরাহ ব্যবহৃত লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি (ইউএলবিএস) থেকে পাওয়া যায় যা অনানুষ্ঠানিক ছোট ক্ষেত্রগুলো দ্বারা রিসাইকেল্ড হয়। এছাড়াও বর্তমানে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি ব্যবস্থাপনার যে খসরা বিধি আাছে তাতে যথাযথভাবে রিসাইক্লিং ব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

যার ফলে বাংলাদেশে ব্যাটারি হ্যাণ্ডলিং, পরিবহন এবং চূরান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য উপযুক্ত আইন জারি করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। এই জন্য সরকারের উচিত ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারির পরিবেশভিত্তিক সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য আলোচিত কৌশলটি অনুসরণ করা।

এসডো এর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে মানবদেহে লেডের প্রভাবের কোন নিরাপদ মাত্রা নেই। আমরা সরকারকে অনুরোধ করবো, নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বাংলাদেশে অবানিজ্যিক এবং বাণিজ্যিক উভয়ক্ষেত্রে ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার জন্য। এই ক্ষেত্রে শিশুশ্রম কমাতে হবে কারণ এই লেড দূষণ শিশুদের মারাত্মক স্নায়ুবৈকল্যের জন্য দায়ী।