অবয়বে কৈশোরের ছাপ সুস্পষ্ট। বয়স মাত্র ১৯। কিন্তু কর্মে এবং উপস্থিতিতে নেতৃত্ব-ব্যক্তিত্ব প্রবল ভাবে বিদ্যমান। ১ জনের সঙ্গে জুড়ে যায় আরো ১০ জন। ওরা ১১ জন মিলে উৎসর্গীকৃত হয় সমাজে নিজেদের ছাপ রাখবার জন্য। পড়াশোনার বাইরে বাকী সময়টা কাটায় তারা উৎসর্গের পিছে। সে সময় দিচ্ছে তারা রক্তদান, শিশু, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং ফুড-ব্যাংকিং এর কাজে। দু বছর ধরে।
কিশোরের পুরো নাম এস কে শাহরিয়ার পান্না। সঙ্গে সংগঠন উৎসর্গের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন জাহিদ। চ্যানেল আই অনলাইনে এসেছিলো পান্না তাদের ১৪ ফেব্রুয়ারির বিষয়ে জানাতে। ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যান এবং খুলনার হদিস পার্কে তারা শিশুদের সঙ্গে আড্ডা দেবেন। পান্না বলেন, ‘আমার বাবা সবসময় একটা কথা বলেন,জীবনে এমন কিছু করো যেন, সমাজ তোমাকে তোমার পরিচয়ে চিনে। এবং ১০ জন মানুষ তেমাকে দেখে নতুন করে হাসতে শেখে, নতুন করে বাঁচতে শেখে। আমি এটা মেনে চলার চেষ্টা করছি। ২০১৬ সালে আমি ট্রমা মেডিকেল ইনিন্সিটিউট এর ১ম বর্ষের ছাত্র। ভাবলাম কিছু একটা করতে হবে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে কিছু করার কথা ভেবেছি। আব্বুর সঙ্গে শেয়ার করতে তিনিও উৎসাহ দিলেন। সঙ্গে ১০ জনকে পেয়ে গেলাম। ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু। এখন আমাদের ১৫ জেলায় কার্যক্রম। যা নিজেদের টিউশনির টাকা এবং শুভানুধ্যায়ীদের অনুদানে চালাচ্ছি আমরা।
আয়োজনের নাম রেখেছে তারা ‘ওদের হাসি, ভালোবাসি’। উৎসর্গের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জাহিদ বলেন, আমরা ভালোবাসা দিবসের প্রচলিত মানে জানি। আমরা এ সময়ের ঠিকই তবে উৎসর্গের আমরা মনে করি ভালোবাসার আরো নানান সংজ্ঞা থাকতে পারে। আমরা ভালোবাসা দিবসের সময়টা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে কাটাতে চেয়েছি। ওদের সঙ্গে খেলাধুলা, খাবার খাওয়া এবং ওদের চাওয়াগুলো জানার চেষ্টা করব। তারপর নিজেদের সামর্থ অনুযায়ি ওদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করব।’
এক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বেশি সহায়তা করছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ এর সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইমরুল কায়েস লিটন।
বিদায় নেবার আগে পান্না বলেন, ‘ আমরা যতদিন বাঁচব এই কাজে নিজেদের উৎসর্গীকৃত রাখব। এটা আমাদের শপথ। পরে মিলিয়ে নেবেন।’ তারুণ্যের নানা হতাশার গল্প ভরা সময়ে ইতিবাচক তারুণ্যের ছবি আশার বারতা ছড়িয়ে দেয়।