পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে ফুরফুরে মন নিয়ে নিজ শহর চট্টগ্রামে গেছে চিটাগং ভাইকিংস। ঘরের মাঠ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই অ্যালেক্স হেলস ও রাইলি রুশো নামের দুই ঝড়ের কবলে পড়েছে মুশফিকুর রহিমের দল। রংপুর রাইডার্সের দুই ব্যাটসম্যানের তাণ্ডবে খড়খুটোর মতই উড়ে গেছে ভাইকিংস বোলাররা!
ষষ্ঠ বিপিএল প্রথম সেঞ্চুরি দেখেছে লরি ইভান্স নামের এক ইংলিশ ব্যাটসম্যানের কল্যাণে। সেই সেঞ্চুরির সুবাস মিলতে না মিলতেই এবার বিপিএলকে এক ইনিংসে দুই শতক উপহার দিলেন অ্যালেক্স হেলস ও রাইলি রুশো। রংপুরের দুই ব্যাটসম্যানের ধুমধাড়াক্কা শতকে বিপিএলের সর্বোচ্চ ২৩৯ রানের সংগ্রহও পেয়েছে রাইডার্সরা।
বিপিএলে প্রথম তো বটেই, টি-টুয়েন্টিতে এর আগে মাত্র দুবার এক ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি পেয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। ২০১১ সালে মিডলসেক্সের বিপক্ষে প্রথমে এই কীর্তি গড়েন কেভিন ও’ব্রায়ান ও হামিস মার্শাল। দ্বিতীয়টি এসেছে বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের কল্যাণে, গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে ২০১৬ সালে।
আসরের শুরুতে ঠিক ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। প্রথম দুই ম্যাচ খেলার পর বসে থাকতে হয় তিন ম্যাচ। আর এভাবে দলের বাইরে থাকাটা যেন শাপে বর হল হেলসের জন্য। আবার যখন দলে ফিরলেন সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন নিজের বিধ্বংসী ফর্ম। আস্তে আস্তে বিপিএলকে চিনে নিয়ে কতটা তাণ্ডব চালাতে পারেন রংপুর রাইডার্সের ইংলিশ ওপেনার সাগরিকায় সেটা যেন হাড়ে হাড়ে টের পেলেন ভাইকিংস বোলাররা!
অথচ ইনিংসের শুরুটা দিচ্ছিল অন্য ইঙ্গিত। দ্বিতীয় ওভারেই আবু জায়েদ রাহির বলে ২ রান করে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন ক্রিস গেইল। কিন্তু হেলস যেন তা আমলেই আনলেন না। রবি ফ্রাইলিঙ্কের করা তৃতীয় ওভারে ১২ রান তুলে সেই যে তাণ্ডবের শুরু করলেন, সেটা চলল বাকি বোলারদের উপরও।
সামনে যে বোলারকে পেলেন তাকেই কচুকাটা করলেন হেলস। ২৩ বলে যখন ফিফটি পেলেন অপরপ্রান্তের সঙ্গী রাইলি রুশোর সংগ্রহ মাত্র ৫ রান!
চারিদিকে ব্যাট চালিয়েছেন হেলস। ১১ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি বিশাল ছক্কা। ৪৭ বলে ১০০ করার ঠিক পরের বলে আউট হয়ে ক্রিজে রেখে গেলেন রাইলি রুশোকে।
হেলস তাণ্ডব চলায় শুরুতে রয়েসয়েই খেলছিলেন এখন পর্যন্ত বিপিএলে সর্বোচ্চ রান তোলা রুশো। কিন্তু খালিদ আহমেদের করা একাদশ ওভারে ১১ রান তোলার পর নিজেও শামিল হলেন তাণ্ডবে। একদিকে হেলস অন্যপ্রান্তে রুশোর ব্যাটিং ঝড়ে তখন ক্লান্ত চিটাগং বোলাররা।
২৯ বলে ফিফটি পাওয়ার পর আর থামানো যায়নি রুশোকে। হেলস আউট হলেও নিজের মতো ব্যাটিং করে গেছেন সাউথ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। ৫১ বলে শতক তুলে অপরাজিত থেকেছেন ঠিক ১০০ রানে। এই একশো রানের মধ্যে ৮০ রানই বাউন্ডারি দিয়ে তুলেছেন রুশো। ৮ চারের সঙ্গে বল উড়িয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন ছয়বার।