দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঙ্গলবার বাজারে এসেছে অরুন্ধতি রায়ের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’। প্রথম উপন্যাস ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ এর ২০ বছর পর তার দ্বিতীয় উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রথম বই প্রকাশের পর তিনি দীর্ঘদিন ধরে নন-ফিকশন লেখালেখি করেন। এ সময় তিনি দারিদ্র এবং কাশ্মির সংকটের মতো ইস্যুগুলো নিয়ে আর্টিকেল লিখেন। তার লেখনীগুলোর অধিকাংশই ভারতের শাসকগোষ্ঠীর কঠোর সমালোচনামূলক। এ কারণে তিনি তাদের রোষানলেও পড়েন। এইসব ঘটনার প্রভাবও পড়ে তার নতুন উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’ এ।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে উপন্যাসটি লিখেছেন।
প্রকাশনী সংস্থা পেঙ্গুইনের পক্ষ থেকে বলা হয়, উপন্যাসটি পাঠকদের পুরনো দিল্লীর পিছিয়ে পড়া ও দলিত সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকাগুলো থেকে কাশ্মির উপত্যকা এবং মধ্যভারতের মাওবাদীদের কাছে নিয়ে যাবে। ওই অঞ্চলের জঙ্গলে তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্রোহ তৎপরতা চালাচ্ছে।
আদালত অবমাননার দায়ে কিছু সময়ে কারাগারেও ছিলেন অরুন্ধতি রায়। ২০১০ সালে গোলযোগপূর্ণ কাশ্মির অঞ্চলে ভারত শাসনের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করে একটি লেখা প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। এখনও তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা চলছে।
তিনি তার গবেষণা চালাতে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গেও সময় কাটিয়েছেন। মাওবাদী বিদ্রোহীরা ভারতের মধ্যাঞ্চলের সম্পদ সমৃদ্ধ জঙ্গলে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেটি)’র তীব্র নিন্দা করে বিভিন্ন লেখা লিখেছেন এই লেখিকা।
২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিম বিরোধী ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার ঘটনায় তিনি একবার মোদিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে গুজরাটে ভয়াবহ দাঙ্গার সময় নির্লিপ্ত থাকেন।
‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ এর জন্য অরুন্ধতী বুকার পুরস্কার এবং বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় নারী লেখক যিনি এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পান।
অরুন্ধতী প্রথম উপন্যাসে ভারতের জাতপাত, শ্রেণী ও ধর্মের গণ্ডি ছাড়িয়ে মানবিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন।
বইটিতে ভারতের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। ৮০ লাখ কপি বিক্রি হওয়া বইটি প্রকাশের পরই সাহিত্য জগতে নিজের অবস্থান তৈরি করেন অরুন্ধতি।