পেশাগত দায়িত্বপালনকালে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের নারী সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তথা সাংবাদিকদের সুরক্ষার অধিকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে কাজ করা সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যার জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। আর্টিকেল নাইনটিন এই সাংবাদিকের মৃত্যুর অবিলম্বে, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানায়।
শিরিন আবু আকলেহ গত ১১ মে ২০২২ ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে অভিযানের প্রতিবেদন করার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী শিরিনকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালায়, যদিও ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আল-জাজিরাও শিরিনের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে দায়ী করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘সাংবাদিকের পরিচয় বহন করার পরও শিরিন যেভাবে নিহত হলেন তা মর্মান্তিক। সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষই এক্ষেত্রে একজন নারী সাংবাদিকের প্রাণহানির ঘটনায় জড়িয়ে গেলো। এই ঘটনায় আরও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে- সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সরকার ও কর্তৃপক্ষ যা করছে তা যথেষ্ট নয়। রাশিয়া ও ইসরায়েলের মতো সামরিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ভয়ঙ্কর প্রবনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। আমরা শিরিনের মৃত্যুর অবিলম্বে, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বাধীন তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই। পাশাপাশি এই ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি জানাই।’

শিরিন ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের বিষয়ে রিপোর্ট করে আসছিলেন। পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে অভিযানের রিপোর্ট করার সময় তার মাথায় গুলি করা হয়। এসময় তার পরনে ছিল একটি জ্যাকেট, যার উপর ‘প্রেস’ শব্দটি দৃশ্যমানভাবে লেখা ছিল। শিরিনের সহকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন, শিরিন হেলমেটও পরেছিলেন, তবুও তাকে সরাসরি হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়।