নেপালে ভূমিকম্পে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় একই সময় ভূমিকম্পে ৫ দেশ কেঁপে উঠলেও বাংলাদেশের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও বড় ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, পৃথিবীতে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়া দু’টি শহরের মধ্যে একটি ঢাকা। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে এটিই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আকতার মাহমুদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকা শহরে ৭ মাত্রার চেয়ে বড় ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার বিল্ডিং ধসে পড়বে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হবে ভূমিকম্প পরবর্তী অবস্থা মোকাবেলা করতে।
নেপালে যে মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম মাত্রায় হলেও আমাদের পর্যাপ্ত কাঠামোগত সক্ষমতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প যদি তীব্রতর হয় তবে সেদিক থেকে আমাদের এ দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত সক্ষমতা নেই।
এমন দুর্যোগ মোকাবেলা করতে গণ সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমরা কোন দিক দিয়ে বের হব, বিল্ডিংয়ের কোন জায়গায় দাঁড়াব ও খোলা মাঠের কোন জায়গাতে দাঁড়াতে পারি সে বিষয়ে জানা থাকা উচিত।
এমন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে সবার আগে প্রয়োজন বিল্ডিং কোড মেনে বাড়ি নির্মাণ। পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থা গড়ে তোলা। প্রফেসর আকতার বলেন, একটা বিল্ডিং কোড আছে, এই বিল্ডিং কোড অনুযায়ী কঠোমোগত দিক এবং নকশা এই দুই দিক মেনে যদি বিল্ডিং করা হয় তবে এমন ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব।
শনিবার সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত নেপালে কমপক্ষে ১৪ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে তীব্র ছিলো দুপুরের দিকে ৭.৯ মাত্রায়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নেপালের পোখারা থেকে ৮০ কিলোমিটার পূর্বে লামজুমে।
দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ‘হিমালয়কন্যা’ নেপাল। দেশটিতে ৮১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্পে নিখোঁজ রয়েছে আরো অনেক মানুষ।