রুমাল বিক্রেতাদের জন্য আদর্শ এলাকা হতে পারে রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল। কেননা মাতুয়াইল বসবাসকারীদের রুমালে নাক-মুখ ঢেকে রাস্তায় বের হতে হয়। রাজধানীর যে কোনো এলাকার চেয়ে ডেমরার মাতুয়াইল এলাকায় রুমাল বিক্রি বেশিই হওয়ার কথা।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে মাতুয়াইল মাদরাসা বাজার থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত তিন-চার কিলোমিটার জায়গা জুড়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ফেলা হয় বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা। আবর্জনার স্তূপ বোঝাই হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রাস্তায়। বৃষ্টি হলে রাস্তা জুরে ভাসতে থাকে পচা, দুর্গন্ধ আবর্জনা।
সরেজমিনে দেখা যায় মাতুয়াইল মাদরাসা বাজার থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত রাস্তার উত্তর পাশে বাসা বাড়ি আবর্জনার স্তুপ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ভ্যান গাড়িতে করে আবর্জনা এনে ফেলতে দেখা যায়। বিকট দুর্গন্ধের কারণে পথচারীরা চলছে নাকে রুমাল চেপে।
স্থানীয় জুটমিলের কর্মচারী মোঃ মতিয়ার রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এই পথ দিয়ে প্রতিদিনে যাওয়া আসা করতে হয়। এত গন্ধ যে মনে হয় অজ্ঞান হয়ে যাব। যত দিন যাচ্ছে ময়লা বাড়ছে। বৃষ্টি হলে ময়লা ভাসতে থাকে সারা রাস্তায়। এসব ডিঙ্গিয়ে যাওয়া আসা করি।’
দুই তিন মাস আগে সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তাভর্তি ময়লা দেখে দ্রুত রাস্তা পরিষ্কারের নির্দেশ দেন। তখন ডেজার মেশিন এনে ময়লা ঠেলে রাস্তার পাশে রাখা হয়। কিছুদিন পর আবার আগের মতো হয়ে গেছে বলে জানালেন মোঃ মতিয়ার রহমান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রহিমা বেগম রিকশা যাচ্ছিলেন। ওড়না দিয়ে নাক ঢেকে। তিনি বললেন, ‘আমার বাসা এখানেই। চলাচলের আর কোনো রাস্তা নেই। ওড়না দিয়ে নাক বন্ধ করে এই পথেই চলতে হয়। দেখার যেন কেউ নেই।’ ময়লা থেকে জন্ম নেওয়া মশা মাছিও এলাকাবাসীর দুর্ভোগের আরেক কারণ বলে জানান রহিমা।
মাতুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ রাশেদ আলী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। রাস্তার পাশের এই ডোবাগুলো সরকারী জায়গা বলে এখানে ময়লা ফেলেছে। আমরা নিষেধ করেছি। কিন্তু ওরা নিষেধ শোনে না। রাতে এসে ময়লা ফেলে যায়।’
অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাতুয়াইল ইউনিয়ন এখন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভভুক্ত। এই ময়লা যেন সিটি কর্পোরেশনের ডাম্পিং পয়েন্টে ফেলা হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিব। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
শুধু মাতুয়াইল না, যাত্রাবাড়ী-ডেমরার ফ্লাইওভার শেষ হওয়ার আগ থেকেই ডেমরা বাসীর জন্য অসীম দুর্ভোগ নিয়ে স্তূপ হয়ে আছে ময়লা। ফ্লাই ওভারের নিচটা ময়লায় ভর্তি। ফ্লাইওভার শেষ হলে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে দেখা যায় হাঁটু সমান ময়লা। এর ভেতরেই কষ্টে সৃষ্টে চলছে যাত্রীবাহী বাস।
স্থানীয় কলেজ ছাত্র তপু বলেন, ‘আধা কিলো দূরে সিটি করপোরেশনের ময়লার ডাম্প। এদিক দিয়ে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি যায়। যাওয়ার সময় রাস্তায় ময়লা ফেলতে ফেলতে যায়। দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা যায় না।’