জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধির আদেশের পর তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘এই আদেশ অনভিপ্রেত এবং নজিরবিহীন।
আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা একটা নজিরবিহীন আদেশ হয়েছে। আমরা নজিরবিহীন বলতে বাধ্য হচ্ছি এই কারণে যে, অতীতে এই ধরনের আদেশ দেশের সর্বোচ্চ আদালত দেয়নি।’
এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আজকে জাতির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, একটা অনোভিপ্রেত আদেশ আজকে হলো। দেশের সর্বোচ্চ আদালত যে আদেশটি দিলেন, এতে আমরা খুব মর্মাহত হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, নিম্ন আদালতগুলো এই সরকার গ্রাস করে ফেলেছে। উচ্চ আদালতকেও মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে গ্রাস করার চেষ্টা করছে। তাই আদালতকে আমি বলেছি, মাননীয় আদালত। দেশের মানুষ আপনাদের কাছে বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে আসে। কিন্তু তারা আশাহত হলে এই বিচারপ্রার্থী মানুষের আদালতের প্রতি আস্থা থাকবে না।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিল বিভাগের আদেশে ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত হয়।
জামিন স্থগিত চেয়ে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক লিভ টু আপিল গ্রহণ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার আদেশ দেন।
আদালত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সার সংক্ষেপ জমা দিতে বলেন। এবং এর পরের দুই সপ্তাহের মধ্যে আসামিপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে আদালত আগামী ৮ মে আপিল শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। আর খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানকে এই মামলায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
সেই সঙ্গে খালেদা তারেকসহ দণ্ডিত সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা জরিমানা করা হয়।
এই রায়ের পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
গত ১২ মার্চ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন।