আলোকিত মানুষ তৈরির লক্ষ্যে বইপড়া কর্মসূচিতে অংশ নেয়া বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার দিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। জ্ঞানের আলোয় নিজেকে আলোকিত করার পাশাপাশি দেশকেও আলোকিত করতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়েছেন আলোকিত মানুষেরা।
২০১৬ শিক্ষাবর্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারি পুরস্কারজয়ী শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করেন শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, পড়াশোনা করে আমি যা শিখবো তা অন্যভাবে শিখলে সমস্যা কি? আমি বাচ্চাদের বললাম, তোমরা স্কুলে গিয়ে বলবে, ক্লাস এইটের আগে কোনো লেখাপড়া নেই। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমার বন্ধু বান্ধবকে বই পড়া শেখাবে, দশজনকে অন্তত শেখাবে।
৩৯ বছর ধরে সারাদেশে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বই পড়িয়ে আলোকিত করার কাজটি করে আসছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। সকাল হতেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলবেঁধে আসতে থাকে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বছরব্যাপী বইপড়া কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণীর দু’দিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশিষ্টজনেরা।
উদ্বোধনী দিনের প্রথম পর্বে ঢাকা মহানগরীর ৫২টি স্কুলের প্রায় দু’হাজার শিশুকে পুরস্কৃত করা হয়। গ্রামীণ ফোনের সহযোগিতায় এ বছর মহানগরীর ১শ’ ১১টি স্কুলের ৫ হাজার ৬শ’ ৯৮ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরষ্কার হিসেবে তুলে দেয়া হবে বই।
কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো আর সেগুলো আমি পেয়েছিলাম বই থেকে। সবাইকেই তাই বই পড়তে হবে।
কথাসাহিত্যক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, একটা বাচ্চা ছেলেকে জিজ্ঞাসা করা হলো তোমাকে এই ঘরটাকে ভরে দিতে বললে কি দিয়ে ভরে দিবে, ছেলেটি বললো, ঘরের মাঝখানে একটি বাল্ব জালিয়ে দিবো, ঘরটি আলোয় ভরে যাবে। তোমরা বই পড়বে, তোমাদের আলোয় বাংলাদেশ আলোকিত হবে। আমরা আলোকিত হবো।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, এখান থেকে জ্ঞান আহরণ করে স্বপ্ন নিয়ে বড় হবে। আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই, তোমাদের মাধ্যমেই সমৃদ্ধি আসবে। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, মানুষ দুই রকম, এক যারা প্রাণী হিসেবে জন্ম নেয় এবং অন্যরা আলোকিত মানুষ। আমাদের সবাইকে এই আলোকিত মানুষ হতে হবে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রত্যাশা ২৩ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বই দিবসে ঢাকা শহরের দশ লাখ পাঠককে বই উপহার দেওয়া হবে।