বাংলা নববর্ষে প্রথমবারের মতো কলকাতার রাস্তায় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় এবারের বৈশাখ আগমনীতে। এ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগান থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় তিন কিলোমিটার পথজুড়ে ছিল নানা আলপনার ছাপ।
ছিল কাঠি নাচ, সাঁওতালি নাচ, রনপা নৃত্য, ঐতিহ্যের গান, লোকগীতি, ঢাকি দলের ঢাকের বাজনা আর শ্রুতি নাটক। এতে অংশ নেন সমাজের সকল পেশার মানুষ, ছিলেন শিল্পী, শিক্ষার্থীরাও।
শোভাযাত্রার আয়োজনে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থীরা, কলকাতার নববর্ষ উদযাপন কমিটি এবং কলকাতার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।
এবার কলকাতার নববর্ষ উদযাপন কমিটিকে ১’শ টি মঙ্গল শোভাযাত্রার বাঘ এবং লক্ষ্মী পেঁচার মুখোশ উপহার দেয় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।
শোভাযাত্রার আগের রাতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় আলপনার কাজে। এবারই প্রথম কলকাতার শিক্ষার্থীদের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মুখোশ তৈরির ওয়ার্কশপ এর আয়োজন করা হয় কলকাতায়। এই ওয়ার্কশপের উদ্যোগ নেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওবায়দুল কবির রিক্ত।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন সিলভিয়া নাজনীন, অদিতি মজুমদার, আরাফাত আবির, ঋভু আনান, কাজল, জয়তু চাকমা, তনুজ পাল, বিশ্বজিৎ বাপ্পি, মিথুন বর্ধন, বর্ষণ দাস, এই ওয়ার্কশপে পৃষ্ঠপোষকতা করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু)।
বাংলাদেশের মতোই কলকাতায় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ সুস্থ সংস্কৃতির বার্তা তুলে ধরেন উদ্যোক্তারা। কলকাতার গাঙ্গুলিবাগান থেকে শুরু হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা, আর শেষ হয় যাদবপুরের বিদ্যার্থী ময়দানে। মঙ্গল শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পবিত্র সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিত্রকর সমীর আইচ, লেখিকা মীরাতুন নাহার, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
কলকাতায় এই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে কলকাতার, ‘‘বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদ’’। পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দত্ত।