বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় শুরু থেকেই আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র সীমাহীন উদাসীনতা ও অযোগ্যতা প্রদর্শন করে আসছে। সচেতন মহলের সব ধরনের সতর্ক বার্তা, পরামর্শ পায়ে দলে একগুঁয়েমি করে একের পর এক ভুল পথে এগুতে থাকার ফলে সংকট বেড়েই চলেছে।

চীনে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই অভিজ্ঞ মহল সরকারকে ভাইরাস যাতে দেশে প্রবেশ করতে না পারে এ ব্যাপারে নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে বলে আসলেও এক্ষেত্রে মন্ত্রীদের বাগাড়ম্বর ছাড়া দৃশ্যমান কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। ওই সময় যদি বিমানবন্দরগুলোতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যেত বা আগত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হতো, তাহলে আজকের এই অবস্থা সৃষ্টি হতো না। ভিয়েতনামই তার বড় উদাহরণ।
বিজ্ঞাপন
করোনাভাইরাস দেশে প্রবেশ করার পর প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার সময় থেকে আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগের বড়ই অভাব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে করোনা সংকটকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করে দেশের সব মহলের সাথে বসে আলাপ আলোচনা করে দুর্যোগ মোকাবেলায় একটি সমন্বিত জাতীয় মহা পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হওয়ার কথা বলা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া মেলেনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) বাম গণতান্ত্রিক জোটের অপর দলগুলোকে সাথে নিয়ে একটি সর্বদলীয় পরামর্শ সভার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু, দুঃখজনক হলো এই সভাটিকে নিয়েও মন্ত্রীদের তামাশা করতে দেখা গেছে।

পুরো বিষয়টির মধ্য দিয়ে সরকারের সমন্বয়হীনতা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। কর্মহীন মানুষের ঘরে খাদ্য পৌঁছে দিতে সরকার কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। ফল স্বরূপ লক ডাউন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সচেতন মহলের পরামর্শ ছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে সেনা বাহিনীর সহায়তায় রেশন কার্ড প্রস্তুত করে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে পরিবার প্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী রেশন মূল্যে সরবরাহ করার। এমন আরও অনেক কিছু করা যেত। কিন্তু, সমন্বয়হীনতার কারণে পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হতে থাকে।

আমরা মনে করি, পুরো পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের উচিত দেশের সব মহলকে যুক্ত করে বিশেষ করে রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত মহা পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন করা । এই কাজে যথেষ্ট সময় ক্ষেপণ করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে করোনা সংকট মোকাবেলায় এর কোন বিকল্প নেই।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)
