ঈগলকে বলা হয় পাখির রাজা, ঈগলকে আমরা চিনি শক্তিধর, দক্ষ একটি শিকারি পাখি হিসাবে। কিন্তু বার্তা বাহক হিসাবে খুব একটা পরিচিত হয়েছে কি? তাও আবার উচ্চ মূল্যের বার্তা বাহক!
এমনটাই ঘটছে রাশিয়ান গবেষক, বিজ্ঞানী ও মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের হাত ধরে।
রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা অবগত হন যে, কিছু অভিবাসী ঈগল পাখি ইরান ও পাকিস্তানে উড়ে গিয়ে এসএমএস ট্রান্সমিটারগুলিতে বিপুল পরিমাণ ডেটা রোমিংয়ে কাজ করছে। ফলে রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা অভিবাসী কিছু ঈগল পাখি ট্র্যাক করে চিপসেট বসিয়ে দেন।
পরে দেখা যায়, এই চিপসেট এর ডেটা পেয়ে যাচ্ছে রাশিয়ান একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, যা তারা খুব স্বল্প মূল্যে ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছে। মোবাইল অপারেটরটি হলো মেগাফোন।
যখন ঈগলগুলো একেকটা দেশে ঘুরতে যেতো তখন ওই কোম্পানির নেটওয়ার্ক না থাকলে ডেটা রোমিংয়ে এর মাধ্যমে অন্য অপারেটর এর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পাঠাতো। আর সাধারণত ডেটা রোমিং এ বিল বেশি হয়। তাছাড়া একেক দেশে একেক রকম বিল হয়। যার ফলে বিল অনেক বেড়ে যায়।
এই সংকট সম্পর্কে জানার পর রাশিয়ান মোবাইল ফোন অপারেটর মেগাফোন প্রকল্পটি বাতিল করে এবং একটি বিশেষ সস্তা শুল্কের ওপর রাখার প্রস্তাব দেয়।
মিন নামক তৃণভূমি বিবর্জিত ঈগল বেশ ব্যয়বহুল। কারণ তা কাজাখস্তান থেকে ইরানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। গ্রীষ্মকালে কাজাখস্তানে প্রেরণের জন্য মিন এসএমএস বার্তা সংগ্রহ করে। কিন্তু তা ছিলো মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সোজা ইরানে চলে যায়।
বিবিসি জানায়, কাজাখস্তানে এসএমএসের মূল্য পড়ে ১৫ রুবল। কিন্তু ইরানের প্রতিটি এসএমসের মূল্য ৪৯ রুবল। রাশিয়ান নোভেসিবিরস্কের বন্য প্রাণী পুনর্বাসন কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবক গবেষকদের অর্থায়নের দাবি ছিলো ১০,০০,০০০ রুবল।
গবেষকরা প্রায় ১৩টি ঈগল ট্র্যাক করেছে।
রাশিয়ার নোভোস্টির প্রতিবেদন বলছে, মেগাফোন কোম্পানি গবেষকদের কাছে পাখিগুলিকে মুক্তি দিতে আবেদন করেছে। এর অর্থ তারা ঈগলের রুট মনিটরিং করতে পারেন, গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সংগ্রহের জন্য কাজে লাগাতে পারেন। তার জন্য কোম্পানিটি গবেষকদের অর্থ দাবি পূরণ করবেন।
মূলত ঈগল পাখি সাইবেরিয়া এবং কাজাখস্তানের প্রজনন হয়, তবে শীতের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় উড়ে যায়।