অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নেওয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এর ফলে যুক্তরাজ্য থেকে দক্ষিণ কোরিয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী অনেক জায়গায় ভ্যাকসিনের প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে তালিকাভুক্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ইউরোপের ৮৬টি রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা পর্যালোচনা করে ইউরোপীয় ওষুধ সংস্থা (ইএমএ) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই ভ্যাকসিনের ঝুঁকির চেয়ে উপকারিতা বেশি।
এই প্রতিবেদনে ইউরোপে ভ্যাকসিন নেয়া আড়াই কোটি মানুষের তথ্য প্রতিফলিত হয়েছে। গবেষণায় বয়স ও লিঙ্গ ভিত্তিক কোনো নির্দিষ্ট ঝুঁকির ধরণ চিহ্নিত করতে পারেনি ইএমএ। তবে অধিকাংশ রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনাগুলো ঘটেছে ৬০ বছরের কম বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে।
ইএমএর প্রতিবেদনে দুটি দিক তুলে ধরা হয়েছে- রক্ত জমাট বাঁধার সঙ্গে ভ্যাকসিনের সম্পর্ক এবং কীভাবে তা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রতিবেদনে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘ভ্যাকসিন নেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তের প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ার বিরল ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এই প্রতিবেদনের জন্য ২২ মার্চ পর্যন্ত ইউরোপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, লিশটেনস্টাইন) ৮৬টি ঘটনা নিয়ে গবেষণা চালানো হয়। সকলেই ছিলেন ৬০ বছরের কম বয়সী নারী। এদের মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা গুরুতর।
তবে ইএমএ’র নির্বাহী পরিচালক এমার কুক বলেছেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা কমিটি নিশ্চিত করেছে যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের উপকারিতা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চেয়ে বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ভ্যাকসিন উচ্চমাত্রায় কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি গুরুতর রোগ ও হাসপাতালে যাওয়া প্রতিরোধে সক্ষম এবং এটি জীবন বাঁচাচ্ছে।’
ইউরোপের বেশ কিছু দেশে ৫৫ বা ৬০ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া নরওয়ে ও ডেনমার্কে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পুরোপুরি বাতিলের চিন্তা-ভাবনা চলছে।