‘আজ এমন একজন মানুষের জন্মদিন যিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা। তিনি জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালীদের জন্য। তাঁর গঠিত আওয়ামী লীগের বর্তমান কেউ কেউ ভণ্ডামিতে ব্যস্ত। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, মুজিব কোট পরলেই কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা প্রমাণ হয় না। তাকে হৃদয় থেকে ভালোবাসতে হবে। নয়তো সময় আপনাদেরকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।’
শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’–এ এরকমটাই বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বাঙালী সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত দিনব্যাপি এ উৎসবের বিকালের সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। চ্যানেল আই সরাসরি এ উৎসব সম্প্রচার করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক বাবু অসিম কুমার উকিল ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জোটের উপদেষ্টা অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকেই কেবল মুজিব কোট পরে ঘুরে কেবল সরকারি সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য। অথচ দূর্যোগের সময় এদেরকে খুঁজে যাওয়া যায় না।’
ড. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ যিনি সর্বকালের সেরা বাঙালী। তাঁর জন্মদিনে আজ কিছু বলতে পারছি, এটা আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। তার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য অবদান রাখবো এটাই যেন আমাদের মুলমন্ত্র হয়।’
অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা বলেন, ‘আজ সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালীর জন্মবার্ষিকী। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রজন্মের কাছে আরও বিস্তারিতভাবে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আলোচনা পর্ব শেষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এতে ৫ শতাধিক শিশুর-কিশোরদের মধ্যে বিজয়ী শামসুদ্দীন সুমনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ওবায়দুল কাদের।
এরপর বাবার গাওয়া ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের’ গানটি পরিবেশন করেন অংশুমান রায়ের ছেলে ভাস্বর রায় ও শিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি। উৎসবে আরও গান করেন কাদেরী কিবরিয়া, রথীন্দ্রনাথ রায়, সাদি মহম্মদ, শাহীন সামাদ, চন্দনা মজুমদার, আব্দুল জব্বার, কিরণ চন্দ্র রায়, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, সালমা, মেহেদী হাসানসহ অনেকে। নৃত্য পরিবেশন করেন সোহেল রহমান ও তার দল।
এর আগে সকালে বেলুন উড়িয়ে ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার সূচনা করে উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান। সকাল সাড়ে ১১টায় উপস্থিত হন উৎসবের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বাঙালী সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আজম বাশার। পুরো আয়োজন সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি চয়ন ইসলাম। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আনজাম মাসুদ ও মৌসুমী বড়ুয়া।
কোনাল পরিবেশন করেন উৎসবের সূচনা সংগীত ‘মুজিবুর আছে বাঙালীর অন্তরে, বাঙালীর ঘরে ঘরে’ গানটি। তারপর দিনভর উৎসবে গান, নাচ আর আলোচনায় মুখর ছিল চারুকলার বকুলতলার মঞ্চ। সব বয়সীদের পদভারে মুখরিত ছিল বকুলতলা।
আলোকচিত্রী: সাকিব উল ইসলাম