সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান বন্ধে ‘সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের’ দেওয়া চিঠির বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার সাতটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে রায় দেন।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকে দেওয়া ওই চিঠি সুপ্রিম কোর্টের মতামত নয়। এটা প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে আপিল বিভাগের অফিস থেকে দেয়া চিঠি। এই চিঠি জনগণের মাঝে এই বার্তা দিয়েছে যে, একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির ফৌজদারি কর্মকাণ্ড দায়মুক্তি পেতে পারেন। বস্তুত কেবল পদে থাকাকালীন রাষ্ট্রপতি ছাড়া কেউ দায়মুক্তি পেতে পারেন না।
পর্যবেক্ষণে আদলত আরো বলেছেন, কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত বা অনুসন্ধান পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ বা এজেন্সির বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এর সঙ্গে বিচার বিভাগের মর্যাদার পাশাপাশি বিচারের মান, জনগণের আস্থা জড়িত।
গত ৩১ অক্টোবর এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
এ মামলায় আদালতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে পরামর্শ দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। অ্যাডভোকটে প্রবীর নিয়োগী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস দেয় দুদক। চলতি বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক।
এর জবাবে গত ২৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দুদকে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সে চিঠিতে বিচারপতি জয়নুলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান সমীচীন নয় বলে উল্লেখ করা হয়।