আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে সোমবার এই আদেশ দেন।
আদালতে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
আজকের এই আদেশের পর গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমদের মুক্তিতে বাধা নেই। তবে আরও দুই মামলা থাকায় দিলদার আহমেদ এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে চেম্বার বিচারপতির আদালতের দেয়া জামিন স্থগিতের আদেশের মেয়াদ ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়ে এই দিন আদেশের দিন ধার্য রাখেন।
আর গত ২১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের বিচারপতির মির্জা হোসেইন হায়দার তিন মালিককে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ২ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেন।
এর আগে আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করে গত ১৮ ডিসেম্বর আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. ইমান আলী আগামী।
অর্থ পাচারের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের করা পাঁচ মামলার মধ্যে তিন মামলায় গত ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান দিলদার আহমেদসহ আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক। ওইদিন অন্য দুই মামলা মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) রেখে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে আদেশ দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বনানীর একটি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের নামে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গত মে মাসে গ্রেপ্তার হন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদারের ছেলে সাফাত আহমেদ।
বর্তমানে কারাগারে থাকা সাফাতসহ তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই আপন জুয়েলার্সের ‘অবৈধ লেনদেন’ এর খোঁজে তদন্তে নামে শুল্ক গোয়েন্দা।
মে মাসের শেষ দিকে আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শোরুম থেকে ১৫.৩ মণ সোনা এবং ৭ হাজার ৩৬৯টি হীরার অলঙ্কার জব্দ করে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে গত ১২ আগস্ট আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়।
দুই মামলায় গত ২২ আগস্ট তিন ভাই হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। এরপর বিচারিক আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় গত ২৩ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
এর পরদিন আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠান আদালত। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পাঁচ মামলায় জামিন আবেদন করেন আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই।