বিকেএসপি থেকে: টেস্টে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে উত্থান হয়েছিল মুমিনুল হকের। পরে সুযোগ পেয়েছিলেন ওয়ানডেতেও। তার ব্যাটে উড়ছিল নতুন স্বপ্নের রেণু। কিন্তু নিয়তি পক্ষে ছিল না। রঙিন জার্সিতে ২৬ ওয়ানডে খেলেই থমকে আছে মুমিনুলের ক্যারিয়ার। ওয়ানডের সঙ্গে নাকি যায় না তার ব্যাটিং। ইদানিং ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়ানডে ঢংয়ে ব্যাটিং করে ফেরার দাবিটা জানিয়ে রাখছেন। তবে বাস্তবতাটা জানেন বলেই ওয়ানডে নিয়ে খুব বেশি স্বপ্নও বুনছেন না তিনি।
বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৫ বিশ্বকাপে। টেস্ট ক্রিকেটারের তকমা পেলেও তার ওয়ানডে ক্যারিয়ার খুব খারাপও নয়। ২৩.৬০ গড়ে তিন ফিফটিতে করেছেন ৫৪৩ রান। টেস্টের সঙ্গে তুলনা করলে অবশ্য পার্থক্যটা বোঝা যায়; সাদা পোশাকে মুমিনুলের গড় ৪৬.৮৮।
বছর দুয়েক আগে ওয়ানডেতে মুমিনুল যেমন ছিলেন, এখন অবশ্য তেমন নেই। বদলে গেছেন নানা দিক থেকে। গত প্রিমিয়ার লিগে রান করেছেন একশর কাছাকাছি স্ট্রাইকরেট নিয়ে। চার-ছক্কার মারকাটারি ক্রিকেট বিপিএলে রাজশাহীর কিংসের হয়ে নেমেছেন ওপেনিংয়ে। নেটে যে তুমুল পরিশ্রম করছেন, তার ছাপ পড়েছে মুমিনুলের ব্যাটিংয়ে। টি-টুয়েন্টিতে খেলেছেন এই ফরম্যাটের চাহিদা পূরণ করেই। সময় যতো যাচ্ছে, ততোই পরিণত হচ্ছে মুমিনুলের ব্যাটিং সত্তা। তার বড় একটা নজির মিলেছে বুধবার বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে।
প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ১২০ বলে ১৫২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন গাজী গ্রুপের এই ক্রিকেটার। মেরেছেন ১৬ চার ও ৬ ছক্কা। এমন ইনিংস খেলার পরও নির্লিপ্ত মুমিনুল। ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে যা বললেন তাতে অবাক না হয়ে উপায় নেই, ‘ওয়ানডে কীভাবে খেলা উচিত, তা আগের চেয়ে ভালো বুঝতে পারছি। তবে এখনো পুরোপুরি নয়। এটা বুঝতে পারি যে, ওয়ানডেতে আমার ব্যাটিংটা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।’
বাংলাদেশ দলের ১৮ ক্রিকেটার যেদিন ইংল্যান্ডে ক্যাম্প, আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার রোমাঞ্চ নিয়ে যাত্রা করবেন, সেদিন মুমিনুল জানালেন ওয়ানডে দলে ফেরা নিয়ে তার চিন্তা নেই, ‘ওয়ানডে খেলবো কি খেলবো না, তা নিয়ে এতো চিন্তা করি না। টেস্টে নিয়মিত পারফর্ম করতে পারলে হয়তো সুযোগ আসবে।’
দলের সঙ্গে যেতে না পারায় যে আক্ষেপ আছে, সেটাও লুকাননি মুমিনুল। বলেছেন, ‘মিস করছি। সবার জন্য শুভ কামনা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি চাই দল ভালো পারফর্ম করুক।’
মুমিনুল হাসি মুখে শুভ কামনা জানাচ্ছেন ঠিকই, আড়ালে তার মনটা যে কেঁদেও উঠছে, তা বুঝতে নিশ্চয় মনোবিজ্ঞানী হওয়ার দরকার নেই!