সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহল নামের জঙ্গি আস্তানার দ্বিতীয় তলা থেকে পঞ্চমতলা পর্যন্ত বসবাসকারী সব বাসিন্দাদের অক্ষত উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে অভিযান শুরুর পর ভবনটিতে আটকে থাকা মোট ৬৯ বাসিন্দাকে উদ্ধার করে আনে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো সদস্যরা।
ভবনটির একটি ফ্ল্যাটে এই মুহুর্তে জঙ্গিরা ছাড়া কোন বাসিন্দা নেই বলে শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে ‘আতিয়া মহলে’ অভিযানে অংশ নেয়া একাদিক সেনা সদস্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ভবনটির জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অভিযানে অংশ নেয়া সেনা সদস্যরা।
সিলেট টুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, অভিযান শুরুর আগে সেখান থেকে গণমাধ্যমকর্মীসহ আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ।
অভিযানের কারণে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপের রক্ত ও রক্তদাতাদেরও ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকন উদ্দীর এ ব্যাপারে জানান, এই মুহূর্তে আতিয়া মহল সেনা কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা অভিযান শুরু করেছেন।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত পাঁচতলা ও চারতলাবিশিষ্ট দুটি ভবনের নাম আতিয়া মহল। সিলেট নগরীর আতিয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির বান্দরঘাটের (বন্দরঘাট) বাসিন্দা উস্তার মিয়া।
এই বাড়িতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছে এমন সন্দেহে বৃহস্পতিবার রাত ২ টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। শুক্রবার দিনভর পুলিশ, সোয়াট ও সেনাসদস্যরা বাড়িটিকে ঘিরে রাখে। এসময় হ্যান্ডমাইকে করে বারবার সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানানো হয়। তবে এতে সাড়া মেলেনি। অবশেষে বাড়িটি ঘিরে রাখার প্রায় ত্রিশ ঘন্টা পর চুড়ান্ত অভিযানে নামে সেনা সদস্যরা।
অভিযানে অংশ নেয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে আতিয়া মহলের অন্য ফ্ল্যাটগুলোতে আটকে পড়াদের উদ্ধার করা হবে। পরে জঙ্গিদের ভবনের বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।
ভবন মালিক জানিয়েছেন, পাঁচ তলা ভবনটিতে ৩০ টি ফ্ল্যাটে মোট ২৮ টি পরিবার ভাড়া থাকেন।
এই ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট গত জানুয়ারি মাসে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার পরিচয়ে ভাড়া নেন কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম দম্পতি। ওই ফ্ল্যাটটিকে ঘিরেই চলছে তেত্রিশ ঘন্টা ধরে অভিযান।