তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাকে ‘কালা কানুন’ আখ্যায়িত করে তা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হককে অব্যাহতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে লজ্জার হাত থেকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি স্বাধীন কণ্ঠরোধী আইনের এ ধারাটিকে বাতিলেরও দাবি তোলা হয়।
রোববার সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
ফেসবুকের একটি গোপন গ্রুপে দেওয়া পোস্টকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন তারই সহকর্মী অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহম্মেদ।
সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক তথ্য কমিশনার ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞানের আরেক শিক্ষক সামিনা লুৎফাসহ গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতা বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সাদেকা হালিম বলেন, ৫৭ ধারার বিরুদ্ধে সারাদেশে যখন প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সেই মুহূর্তে এই আইন প্রয়োগ করে আমাদের একজন সহকর্মী যখন অন্য এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তখন লজ্জায় আমাদের মাথা হেট হয়ে যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ভূলুণ্ঠিত হয়। তাই আশা করবো অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার করে এ লজ্জা থেকে আমাদের মুক্তি দেবেন।
মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান বলেন, এই আইনটি মূলত দুটি উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিরোধী মত দমনে এবং নিজ দলের রাজনৈতিক প্রতিযোগীকে শায়েস্তা করতে। স্বাধীন কণ্ঠরোধী এ আইন যখন আমাদেরই এক সহকর্মী অন্য সহকর্মীর বিরুদ্ধে করেন, আমরা লজ্জিত হয়। এর মাধ্যমে যে কু-নজির স্থাপন করা হলো তাতে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
সামিনা লুৎফা বলেন, ফাহমিদুল হক শুধু একজন শিক্ষকই নন, একজন লেখক, গবেষক, সমালোচক এবং সমাজকর্মী। তার কণ্ঠরোধ মানে সমাজের বৃহত্তর একটি চিন্তা ধারার কণ্ঠরোধ। তাই অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা বলেন, দুজন শিক্ষকই আমাদের প্রিয়। তাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়ে হয়তো বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। আমাদের আশা অবিলম্বে এ ভুল বুঝাবুঝির নিরসন হয়ে তাদের মধ্যে সহকর্মীসুলভ স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় থাকবে। বিভাগের পরিবেশ স্থিতিশীল হবে।