এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ভারত সফরের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ইলন মাস্কের। কিন্তু ভারত সফরের পরিকল্পনা শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন করে চীনে চলে যান তিনি। মাস্ক জানিয়েছিলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজের কারণেই তাকে চীনে যেতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হলে জানা যায়, ইলন মাস্ক নাকি চীনে গুপ্তচরবৃত্তি চালান। বিষয়টি জেনে যাওয়াতেই চীনে যেতে হয় মাস্ককে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ সংস্থা টেসলার যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বড় বাজার রয়েছে চীনে। এমনকি টেসলার সবচেয়ে বড় কারখানাটিও রয়েছে চীনের করমুক্ত এলাকায়। টেসলার মোট ১৭ লক্ষ গাড়ি চীনের সড়কে চলাচল করে। এমনকি টেসলার সুপারচার্জিং স্টেশনও যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি রয়েছে চীনেই।
অভিযোগ রয়েছে, টেসলার গাড়িগুলোর মাধ্যমেই নাকি চীনের গোপন তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করার পরিকল্পনা করছেন ইলন মাস্ক। সেই কারণে টেসলার গাড়ি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন।
জানা গেছে, বৈদ্যুতিক গাড়ির মধ্যে ‘ফুল সেলফ ড্রাইভিং’ (এফএসডি) নামের এক প্রযুক্তি চীনে টেসলার যে গাড়িগুলো চলে, সেগুলোতে যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। এই প্রযুক্তি গাড়িতে থাকলে কোনও চালক ছাড়াই সেই গাড়িটি চালানো যাবে। কিন্তু মাস্কের এই প্রস্তাবে চীনের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়।
এফএসডি প্রযুক্তির গাড়ি কোথাও চালানো হলে সেখানকার রাস্তাঘাট সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানা প্রয়োজন। ইলনের দাবি, এই নতুন প্রযুক্তির যে সফল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, তা যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গাড়িতে পরীক্ষা চালিয়ে বোঝা গেছে। কিন্তু ইলনের এই বক্তব্য শুনেও রাজি হয়নি চীন। জানা গেছে, টেসলার যে গাড়িগুলো চীনে ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে সেগুলোর সাহায্যে চীনের সড়কব্যবস্থা নিরীক্ষণ করে সেই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চান ইলন মাস্ক।
চীনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সড়কের ব্যাপারে টেসলা অবগত রয়েছে। তাই মহড়া দিতেও সুবিধা হয়েছে। কিন্তু চীনের রাস্তা সম্পর্কে কিছুই জানে না টেসলা। ফলে গাড়িতে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও সেখানে মহড়া দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব হত না। চীনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, টেসলার গাড়িতে ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, যার সাহায্যে সেখানকার সড়কের ছবি তোলা হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থার মতে, টেসলা নাকি প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে সারাবিশ্ব থেকে ২০ লক্ষ গাড়ি আবার ফিরিয়ে নেয়। নির্দিষ্ট সময় পর আবার সেই গাড়িগুলো নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দেয় টেসলা। এখানেই সন্দেহ চীনের। চীন বলছে, টেসলার গাড়ি নাকি গুপ্তচরের কাজ করছে। সে কারণে চীনের সমস্ত সরকারি দফতর থেকে শুরু করে বড় বড় শপিং মলের ভিতর টেসলার গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চীন। সুরক্ষার খাতিরেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বেইজিং।