কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অবরুদ্ধ পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-এর ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছে। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে ইএনও’র নিরাপত্তা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে।
আজ সোমবার ৮ মে বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের গাজিরটেক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের গাজিরটেক এলাকায় বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন যাবত পরিবারটি দেয়ালে দ্বারা অবরুদ্ধ ছিল। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্ম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ একটি টিম নিয়ে অবরুদ্ধ পরিবারটিকে মুক্ত করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা আজিজ মিয়া, সাজিদ, জয়নাল, জসিম উদ্দিনের ছেলে অপু তারা দেশীয় অস্ত্র রামদা, বল্লম দিয়ে মারতে আসেন।
মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, দীর্ঘদিনযাবত একটি পরিবার পাশ্ববর্তী লোকদের দেয়ালের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে মানবেতর দিন পার করছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আজ সেই পরিবারটিকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করতে গেলে তখন বিক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্র রামদা, বল্লম নিয়ে আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। পরে খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়া আমাদের উদ্ধার করে। এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে তিনি জানান।
ইউএনও নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্য এপিসি জামাল উদ্দিন, আনসার সদস্য আশিক ও ইয়াসিন ইসলাম জানান, একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুপুরে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের গাজিরটেক এলাকায় অবরুদ্ধ একটি পরিবারকে মুক্ত করতে গেলে ৫-৬ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। তারা আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
গাজিরটেক এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, জমি সংক্রান্ত জেরে হুমায়ুন কবীরের সাথে স্থানীয় লোকদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন তার বাড়ির পাশ ঘেঁষে কবরস্থানের জায়গায় ইটের দেওয়াল নির্মাণ করেন। তাতে পরিবারটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী হুমায়ুন কবীর বলেন, গত ২৬ মার্চ আমার এলাকার হাজী আরস মিয়া, আজিজ মিয়া, মামুন মিয়া, সহিদ মিয়া, আসাদ মিয়া, সাজিদ মিয়া ও হামিদ মিয়াসহ স্থানীয়রা আমার গাজিরটেক এলাকার মোল্লা পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন দোকান ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমাকে আহত করে। আমি দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলাম। এর আগে অভিযুক্তরা আমাকে মিথ্যা মামলায় চুরির অপবাদ দিয়ে জেল খাটিয়ে আনে। আবার তারা একজোট হয়ে আমার বাড়ির সামনে ইটের দেয়াল নির্মাণ করেছে। আমি আমার বাড়িতে যেতে পারি না। আমার এলাকার কিছু মানুষ চক্রান্ত করে আমার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমি বাড়িতে গেলে আমাকে তারা মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। আমার মা-বউ-সন্তানরা অবরুদ্ধ হয়েছিলেন। আমার বাড়িতে আমার চলাচলের রাস্তা দেয়াল নির্মাণ করে আমার পরিবারকে গৃহবন্দি করে রাখার বিষয়ে আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। সেই প্রেক্ষিতে আজ দেয়াল সরাতে গেলে তারা ইউএনও স্যারের উপর হামলার চেষ্টা করে।