ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি সপ্তাহে ভারতের বেশকিছু রাজ্যে দেখা দিয়েছে বন্যা। বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যে ৩৪ ছাড়িয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, রোববার নয়াদিল্লিতে ১৫৩ মিলিমিটার (৬ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে, যা ১৯৮২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার উত্তর রাজ্যগুলোর জন্য আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশেও ভূমিধসের সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। এদিকে আজ থেকে আগামী পাঁচ দিনের জন্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য বিচ্ছিন্ন ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় হিমাচল প্রদেশে পাঁচ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। হিমাচল প্রদেশের মন্ত্রী জগৎ সিং নেগি বলেছেন, এখন পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি মানুষ প্রধানত সড়ক দুর্ঘটনা এবং অনুরূপ কারণে প্রাণ হারিয়েছে। ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার কারণে প্রাণহানির পরিমাণ তেমন বেশি নয়। প্রধান জাতীয় মহাসড়ক, জেলা এবং সংযোগ সড়কসহ ১৩০০টিরও বেশি রাজ্যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা আগামী দুই দিনের জন্য উচ্চ সতর্কতায় আছি।
তিনি বলেন, আমি সকলকে নিরাপদে থাকার এবং তাদের বাড়ির ভিতরে থাকার জন্য আবেদন করছি। যাতায়াতের কোনো উপায় না থাকায় স্কুল-কলেজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হিমাচল প্রদেশ জুড়ে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। সোমবারের প্রথম দিকে বিয়াস নদীর কাছে কুল্লু জেলার একটি হোটেল থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেশী উত্তরাখণ্ডেও ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার খবর এবং নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার খবর পাওয়া গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া ও সাম্বা জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার বেশ কয়েকটি অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নিচু এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা এবং বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। চণ্ডীগড় এবং আম্বালায় যথাক্রমে ৩২২.২ মিমি এবং ২২৪.১ মিমি রেকর্ড বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে।
বৃষ্টির কারণে উত্তরপ্রদেশ এবং নয়াদিল্লির বেশ কয়েকটি এলাকায় স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, গত ২ দিন থেকে দিল্লিতে প্রবল বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চণ্ডীগড়ের স্কুলগুলো মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ বলেছে, যারা স্কুল খোলা রাখতে পছন্দ করে তাদের অবশ্যই স্কুলে পড়া শিশুদের এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে।