নূরু নামে রাখালের চরিত্রে অভিনয় করছেন চিত্রনায়ক শান্ত খান। চরিত্রটি করার জন্য তাকে অন্যরকম প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। গ্রামের এক গোয়ালে রাখালের সঙ্গে চারদিন মিশেছেন। সকাল সন্ধ্যা এক পাল গরুর দেখাশোনা করেছেন! নিজের গ্ল্যামার লুক থেকে বেরিয়ে আসতে রোদেও পুড়তে হয়েছে শান্তকে।
শুধু তাই নয়, দিনের পর দিন তিনি গোসল না করে কাটাচ্ছেন। মুঠোফোনের ওপাশ থেকে ক্লান্ত কণ্ঠে এমনটাই জানাচ্ছিলেন শান্ত খান।
আর তরুণ এই অভিনেতা এসব করছেন পূজন মজুমদারের পরিচালনায় ‘প্রিয়া রে’ সিনেমার চরিত্রের জন্য! যে চরিত্রটিতে নেই নায়কোচিত কোনো ভাবসাব। সিনেমাটিতে শান্তর নায়িকা কলকাতার কৌশানী মুখোপাধ্যায়। যিনি চাঁদপুরে সাতদিন শুটিং করলেও সোমবার দুপুরে কলকাতায় ফিরে গেছেন। নভেম্বরে ঢাকায় এসে বাকি অংশের শুটিং করবেন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে শান্ত খান বলেন, এই গরমের মধ্যে আজ দিয়ে নয় দিন হলো গোসল করি না। আরও চারদিন এভাবে থাকতে হবে। শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছে। একটু পর পর পারফিউম দিচ্ছি। আজ আমার শুটিং নেই। তবুও গোসল করতে দেয়নি। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছেছি। গোসল না করায় মাথা ব্যথা করছে।
তরুণ এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘যখন সিনেমায় অভিনয় করতাম না তখন আমি নিজেও একটি সিনেমা দেখে ভালো না লাগলে মন্দ কমেন্ট করতাম। কিন্তু একটি সিনেমায় যে এতো কষ্ট, কাজ না করলে বুঝতাম না।’
আবেগপ্রবণ হয়ে শান্ত খান বলেন, কয়েকদিন আগে শুটিংয়ে এসে আমার কষ্ট দেখে আব্বু (প্রযোজক সেলিম খান) কান্না করে দিয়েছেন। শুটিংয়ে এসে বলেছেন, পরবর্তীতে এত কষ্ট করার দরকার নেই। আমি যাই কিছু করছি, চরিত্রটির মধ্যে ডুবে থাকার জন্য করি। পরিচালকের কথা মেনে চলছি। প্রচণ্ড কষ্ট অনুভব করছি। দিনমজুর যারা তারাও মনে হয় এতো কষ্ট করে কাজ করে না। কষ্ট করছি নিশ্চয়ই ভালো ফল পাবো। পরিচালকের এটি প্রথম সিনেমা। তিনিও খুব মনযোগ দিয়ে গুছিয়ে শুটিং করছেন।
‘প্রেম চোর’, ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াঁ ভাই’ দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে শান্ত খানের। মুক্তির অপেক্ষায় আছে বুবুজান, গ্যাং স্টার নামে আরও দুই সিনেমা। ওই দুটি সিনেমা মসলাদার বাণিজ্যিক ধারার। তবে ‘প্রিয়া রে’ সিনেমাটি পুরোপুরি গ্রামের আবহ বলে জানালেন শান্ত খান।
তিনি বলেন, বাস্তবে আমি চেয়ারম্যানের ছেলে। কিন্তু সিনেমাতে হচ্ছে ঠিক উল্টো। চেয়ারম্যানের মেয়ের সঙ্গে রাখালের বিভিন্ন ঘটনা ঘঠবে। এরমধ্যেই টুইস্ট ও রিভেঞ্জ আছে। বরিশালের এক চরে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা নিয়ে ‘প্রিয়া রে’।
ফেসবুক ইউটিউবে শান্তকে প্রায়ই কটু কথা শুনতে হয়। নেটিজনরা মন্তব্যে করেন, ‘বাবার টাকা আছে বলেই শান্ত খান নায়ক হতে পেরেছেন’। এমন মন্তব্য চোখ এড়ায়নি শান্তর। যারা এমন বলে থাকেন তাদের উদ্দেশে শান্ত বলেন, বাবার টাকা অনেকের আছে। যারা এটা বলে তাদের অনেকের বাবার টাকা আছে। তারা নায়ক হয়ে দেখাক। বলা অনেক সহজ, কিন্তু করে দেখানো কঠিন।
ভারতের দক্ষিণী রামচরণ, আল্লু আর্জুন, প্রভাস, জুনিয়র এনটিআর থেকে অনেকের বাবা ফিল্মের সঙ্গে জড়িত। অথচ তারা প্রত্যেকে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। আমিও নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কষ্ট করে যাচ্ছি। দুদিন আগে আমাকে সকাল আটটায় কল টাইম দিয়ে বিকেল পাঁচটায় শুটিং করিয়েছে। আমি তো বাবার টাকার জোর দেখাইনি। শিল্পী শিল্পীর মতো থেকেছি। শাপলা মিডিয়ার বাইরে এখনও পর্যন্ত ১০টির মতো সিনেমা পেয়েও ছেড়েছি। গল্প, বাজেটসহ আরও বিভিন্ন থাকে।