ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় পরপর তিনদিন ডেকে নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ভারতীয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
এদিকে রাহুল গান্ধীর হাজিরা দেওয়াকে ঘিরে ইডির দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। ফলে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ইডির দপ্তর।
বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য জানতেই রাহুল গান্ধিকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। চলতি সপ্তাহের সোমবার প্রথমবার ইডির দপ্তরে হাজিরা দেন রাহুল। মঙ্গলবারও তাকে আবার ডাকা হয়। প্রায় টানা ১০ ঘণ্টা জেরার পর আজ বুধবার আবারও তাকে ইডির দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
এরইমধ্যে মঙ্গলবার ইডির দপ্তর থেকে বেরিয়ে মধ্যরাতে হাসপাতালে যান রাহুল গান্ধী। জানা যায়, রাহুল নিজে অসুস্থ নন। বরং করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তার মা কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতেই হাসপাতালে যান রাহুল।
মঙ্গলবার সকালে ইডির দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার পর থেকে সারাদিন সেখানেই ছিলেন রাহুল গান্ধী। তাকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই কর্মকর্তারা। রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ ইডির দপ্তর থেকে বের হন রাহুল।
কী কী হচ্ছে ইডির দপ্তরে?
মঙ্গলবার সকালেই ইডির দপ্তরে হাজির হন রাহুল। কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে রাহুলকে জেরা করতে শুরু করেন ইডি কর্মকর্তারা। দুপুরের খাবারের জন্য মাঝে এক ঘণ্টার বিরতি নেন রাহুল। পরে ফের জেরা শুরু করা হয় তাকে।
জানা যায়, বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত মামলার তদন্তে একাধিক দফায় জেরা করা হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। তার যাবতীয় বয়ান রেকর্ডও করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বয়ানের ট্রান্সস্ক্রিপ্ট জমা দেওয়ার আগে রাহুল একবার বয়ানটি সম্পূর্ণ পড়ে নেন। দুই দিন মিলিয়ে মোট ২১ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। জেরার প্রথম দিন অর্থাৎ সোমবার ১০ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল রাহুল গান্ধীকে। মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টা জেরা করা হয় তাকে।
একই মামলায় ইডির তরফে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীকেও তলব করা হয়েছে। গত ৮ জুন ইডির দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু এর আগেই তিনি করোনা আক্রান্ত হন। ফলে হাজিরার তারিখ পিছিয়ে ২৩ জুন করে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে যদি সোনিয়া গান্ধী সুস্থ হয়ে ওঠেন, তবে তিনি হাজিরা দেবেন। নাহলে আবারও হাজিরার তারিখ বদলাতে হবে ইডিকে।
কংগ্রেস দলের অভিযোগ রাহুল গান্ধীকে হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইশারায় সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপূর্ণমূলক হয়ে এ কাজ করছে ইডি। এর প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে তারা। মূলত দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা ইডির শাখা কার্যালয়ের সামনে তারা এ বিক্ষোভ করে।