ব্যাট করতে নামার অপেক্ষায় থাকা ক্রিকেটারদের ড্রেসিংরুমে প্যাড পরা অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। এমন অবস্থায় যদি কারো ঘুমিয়ে পড়ার উপক্রম হয়, সেটি বিস্ময়করই। চলতি অ্যাশেজ সিরিজেই ঘটেছে এমন কাণ্ড। ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ইংলিশ ব্যাটার অলি পোপ।
লর্ডসে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথমদিনে ফিল্ডিংয়ের সময় বল ধরতে গিয়ে পোপ ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাতে কাঁধের হাড় ভেঙে যায়। গুরুতর চোট নিয়েও ইংল্যান্ড সহ-অধিনায়ক লর্ডস টেস্টে খেলা চালিয়ে যান। চোট উপেক্ষা করে ব্যাট হাতে দুই ইনিংসে করেন ৪২ ও ৩ রান।
ব্যথা তীব্র আকার নিলে ব্যথানাশক ওষুধ খেতে বাধ্য হন ২৫ বর্ষী ক্রিকেটার। সেটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ব্যাট করতে নামার আগে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন পোপ। ব্রিটিশ গণমাধ্যমে নিজেই ঘটনাটি সামনে এনেছেন।
‘মারাত্মক ব্যথা ছিল। অতিমাত্রার ব্যথানাশক ওষুধ খেয়েছিলাম। ব্যাট করার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। কারণ ব্যথানাশক ওষুধগুলোর মাত্রা খুবই শক্তিশালী ছিল। এটা বেশ বিরক্তিকর ছিল। ব্যাটিং ইনিংস শুরুর পর সব ঠিকঠাক ছিল।’
অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামার সময় ইংল্যান্ড দলের কর্তারা পোপকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ব্যাট করার জন্য ইংলিশ ব্যাটার ফিট ছিলেন বলেই কর্তারা মনে করেছিলেন। পোপের দাবি, কর্মকর্তারা চিকিৎসা কর্মীদের সুপারিশের বিরুদ্ধে তাকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যা খুবই হতাশাজনক। মিড-অনে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করার সময় কিছু রান বাঁচানোর চেষ্টায় তার চোটের অবস্থার আরও অবনতি হয়।
পরে ইংল্যান্ডের তিন নম্বর পজিশনে নেমে পোপের পক্ষে ব্যাট করাটা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ঘটনার বিবরণে বলেছেন, ‘ভেবেছিলাম সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে কয়েক মিনিট ব্যাট করি এবং কিছু রান পাই। জো রুট এবং হ্যারি ব্রুক যেন সুবিধাজনক অবস্থানে রাখে। জানতাম আমি পুল বা কাট শট খেলতে পারব না।’
‘দ্বিতীয় ইনিংসে আমার নড়াচড়া পর্যাপ্ত ছিল না। সম্ভবত প্রতি বলেই শর্ট বল মোকাবিলার সময় ঘামছিলাম। কারণ জানতাম যে আমাকে মারতে হবে অথবা শট না খেলে বল ছেড়ে দিতে হবে। কারণ কাঁধের উপর চাপ নিয়ে শট খেলা সম্ভব হচ্ছিল না।’
অ্যাশেজ সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়া পোপের কাঁধে ইতিমধ্যেই অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘চিকিৎসকরা পুরো জয়েন্টকে স্থিতিশীল রাখার জন্য কিছুটা হাড় কেটে ফেলেছেন। কিহোল সার্জারির পরিবর্তে এমনটা আমি আগেও করেছি।’
নভেম্বর মাস পর্যন্ত পোপ মাঠের বাইরে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর তিনি একটি টি-টুয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে অথবা বিদেশের মাটিতে লাল বলের ক্রিকেটে মাঠে ফিরতে চান। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ভারত সফর দিয়ে ব্যাট হাতে নামা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেন না।