সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ হল বাংলাদেশের। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে ২-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। গোল করেন লেইরেন জ্যাম ও লেভিস জংলিনমুন।
ভুটানের রাজধানী থিম্পুর চাংলিমিথাম স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ছয়টায় খেলা শুরু হয়। ফাইনাল খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত হয়েছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। এসময় মাঠে খেলোয়াড়দের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।
ম্যাচে প্রথম আক্রমণে ওঠে ভারত, প্রথমে ফাউল ও অফসাইডের ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ। ভারতের খেলোয়াড়রা বাঁ-দিক থেকে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা চালালে বাংলাদেশও বাঁ-দিক থেকে আক্রমণ গড়তে থাকে।
অষ্টম মিনিটে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ভারতকে আনন্দে ভাসান লেইরেন জ্যাম। বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের ভুলে ডি বক্সের মধ্যে বল পান এ ফরোয়ার্ড, গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে মোটেও ভুল করেননি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ভারত।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। গোলের চেষ্টায় সবাই উপরে উঠে গেলে কাউন্টার অ্যাটাক করে ভারত। অবশ্য ব্যাকপাসে গোলকিপারের দৃঢ়তায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
পরে ১৭ মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় নাজমুল হুদা ফয়সালের দল। ভারতের গোলকিপারকে ডি বক্সের ভেতর একা পেলেও গোল করতে পারেনি, উল্টো গোলকিপারকে ফাউল করে নিশ্চিত সুযোগ হারায়।
খেলার ২২ মিনিটে বাংলাদেশ নিজেরাই বল জালে জড়িয়ে দিচ্ছিল ডিফেন্ডার ও গোলকিপারের ভুলে। বল ক্লিয়ার করতে গোলকিপার নাহিদুল ইসলামের কাছে ব্যাকপাস দিলে তিনি বল ক্লিয়ারে ব্যর্থ হন। আরেকটি বিপদ থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ২৬ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে দারুণ ক্রস করেন অমিত, সুযোগ নষ্ট করেন মং চিং মারমা। গোলহজম করে খেই হারানো বাংলাদেশ বারবার ভুল করতে থাকে।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে আরেকবার দলকে বিপদ থেকে বাঁচান কিপার নাহিদ। ৪৩ মিনিটের সুযোগ কাজে লাগাতে পারতো বাংলাদেশ। বাঁ-দিক থেকে আসা ক্রস কাজে লাগাতে পারেনি রাইট উইঙ্গার, হতাশা হতে হয় আবারও। শেষপর্যন্ত ১-০ গোলের ব্যবধান নিয়ে প্রথমার্ধে মাঠ ছাড়ে দুদল।
দ্বিতীয়ার্ধে ছন্নছাড়া বাংলাদেশকে দেখা যায়, আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে ভারত। ৫৭ মিনিটে বিপদে পড়তে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। নাহিদের আরেকটি দৃঢ় প্রচেষ্টায় বেঁচে যায় লাল-সবুজের দল।
বাংলাদেশ যুবারা চেষ্টার কমতি না রাখলেও ডি বক্সের আগে গিয়ে প্রতিবারই খেই হারিয়ে ফেলেছে। ৬৩ মিনিটে গত ম্যাচের গোলস্কোরার আবু সাঈদ ডানদিক থেকে ভালো ক্রস করলেও আবদুল্লাহ সাঈদ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি, উল্টো দেখেন হলুদ কার্ড।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে বিপদ আরও বাড়ে বাংলাদেশের। ম্যাচে দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে দলটি। বাংলাদেশের কর্নার ক্লিয়ার করেন ভারতের গোলকিপার। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে লেফট উইং বাঁ-পায়ে দুরন্ত গতির শটে ব্যবধান ২-০ করেন লেভিস জংলিনমুন।
শেষদিকে ভারত বারবার আক্রমণ করলেও দুই-একটি আক্রমণে বল গোলমুখে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষপর্যন্ত পরাজয়ে মাঠ ছাড়ে।
সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন মোর্শেদ আলী ও আবু সাঈদ।