ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন করেছে রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের (পূর্বতন নারী শিক্ষা মন্দির) শিক্ষকরা।
সোমবার ২ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এ দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ ঐতিহ্যবাহী শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসাবে যোগদান করেন। তিনি সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে স্কুলে বিভিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাশীল ব্যক্তির দোহাই দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে একটি ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেন। তার অনৈতিক আচরণে শিক্ষক ও ছাত্রী প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়েছে। এর ফলে এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ে ছাত্রী সংখ্যা কমে যায়। শারিরীকভাবে হেনস্থা হওয়ার ভয়ে অভিভাবকরা মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেন না। নারী শিক্ষকরাও যৌন হয়রানির শিকার হয়। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হতে হতে হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ তোফায়েল আহমদকে কয়েক দফা মৌখিকভাবে জানালেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
তারা আরও বলেন, পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে আমরা স্থানীয় এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বিষয়ে অবগত করি। এরপর রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। পদ ছাড়লেও রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ ও তার অনুসারী-সহযোগীরা এখনও আমাদের নিয়মিত ভয়ভীতি এবং হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তার সহযোগীরা হচ্ছেন রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ তোফায়েল আহমদ এবং শিক্ষক ফাতেমা আক্তার, তাহমিনা আক্তার, সালমা বেগম, জাকিয়া আহমেদ, বীনা আক্তার, মনিরা শারমিন, আফরোজা ইয়াসমিন, আয়শা সিদ্দিকা, আমিনা বেগম।পরিতাপের বিষয় হচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তদন্তের নামে প্রহসন করেছে। তদন্তকারী ব্যক্তিরা কোথাও আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেনি। যৌন নিপীড়নের বিষয়ে কথা শোনেননি।
পুরো তদন্তে রিয়াজ উদ্দিনকে নির্দোষ প্রমাণ করেছে। আমরা এই তদন্ত প্রত্যাখান করছি। আমরা চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, স্থানীয় এমপির প্রতিনিধির সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে পুনরায় তদন্ত করা হোক।
ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা আরো বলেন, রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের অনৈতিক কর্মকান্ডের কথা স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, স্থানীয় কাউন্সিলর, গভর্নিং বডির সদস্য, ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকার লোকজন সবাই অবগত আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মৃতি বিজড়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করায় রিয়াজকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আত্মসাৎ করা প্রতিষ্ঠানের অর্থ ফেরত চাই, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং রিয়াজ কর্তৃক অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত সকল শিক্ষকদের চাকুরীচ্যুত করার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সিনিয়র শিক্ষক হামিদা আক্তার, সহকারী শিক্ষক- আকলিমা আক্তার, সৈয়দা মেহনাজ নাইয়ারা, আলেয়া আক্তার, রেখা মন্ডল দিনাসহ অনেকে।