দেশের মেধাবী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রায় তিন দশক ধরে আছেন নির্মাণের সঙ্গে। টেলিভিশন থেকে হাল সময়ের ওটিটি, নির্মাতা হিসেবে সব মাধ্যমেই নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন! তার পরিচালনায় অনেকেই আজ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত! কিন্তু এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে যা করেননি, সেটা হল অভিনয়!
সেই অভিজ্ঞতাও অর্জন করলেন ফারুকী! প্রথমবারের মতো তাকে দেখা যাবে পর্দায়! সিনেমাটির নাম ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’, সংক্ষেপে এটিকে বলা হচ্ছে ‘অটোবায়োগ্রাফি’। ফারুকীর পরিচালনায় সিনেমাটির চিত্রনাট্য যৌথভাবে লিখেছেন ফারুকী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা! সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সিনেমায় ফারুকী অভিনয় করেছেন তার নিজের চরিত্রেই!
‘অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমায় একজন নামকরা অভিনেত্রী এবং একজন নির্মাতার গল্প বলবেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। যেখানে ওই নির্মাতা ও অভিনেত্রীর বিয়ের পর বাচ্চা নেওয়া, বাচ্চা নেওয়ার পরের স্ট্রাগল ফুটে উঠবে সিনেমার পর্দায়। গল্পের সারসংক্ষেপ বলছে, এটি ফারুকী-তিশারই জীবনের একটি অংশ!
সারসংক্ষেপ পড়েও যারা সংশয়ে আছেন, তাদের উদ্দেশে ফারুকী জানাচ্ছেন, “গত পঁচিশ বছর ধরে কাজ করছি। নানা রকম গল্প বলার চেষ্টা করেছি। সেগুলোর একেকটা একেক রকমভাবে মানুষকে স্পর্শ করেছে। কোনোটা বেশী, কোনোটা হয়তো কম। অভিনয় কেমন হওয়া উচিত, কোন গল্প বলা জরুরী- এইসব নিয়ে সারাক্ষণই নিরীক্ষা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যে কাজটা কখনোই করার চেষ্টা করিনি, সেটা হলো অভিনয়। ‘অটোবায়োগ্রাফি’ ছবিটা লেখার সময় থেকেই আমি এবং তিশা দুইজনই জানি এখানে আমাদের দুইজনকেই অভিনয় করতে হবে। প্রথম দিকে এটা নিয়ে আমার মধ্যে ইতস্তত ভাব ছিলো। কারণ অভিনয় একটা ভালনারেবল কাজ। আর এই গল্পে অভিনয় তো আরো ভালনারেবল ব্যাপার। রেদওয়ান রনি গল্প শোনার পর বললো, ‘বস, এই ক্যারেক্টার আপনাকেই করতে হবে।’ তারপরও আমার সংশয় না কাটলে তিশা আমাকে হেল্প করে সিদ্ধান্ত নিতে। ও বলে, ‘এই গল্প তুমি জীবনে একবারই করতে পারবে। করে ফেলো, প্লিজ!’ তার পর তো বাকীটা ইতিহাস…”
‘অটোবায়োগ্রাফি’ সিনেমাটি চরকি প্রযোজিত ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ এর ১২টি সিনেমার একটি। এই প্রজেক্টে ফারুকী দুটি সিনেমা নির্মাণ করছেন।
সিনেমাটির কথা বুধবার (৩০ আগস্ট) প্রকাশ্যে আসার কারণ মূলত বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব! কেননা আসন্ন ২৮তম বুসান চলচ্চিত্র উৎসবের মর্যাদাপূর্ণ ‘কিম জিসুক অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য মনোনীত হয়েছে ‘অটোবায়োগ্রাফি’। প্রয়াত পরিচালক কিম জিসুকের স্মরণে এ পুরষ্কার চালু করা হয়েছিল। ফারুকীর আলোচিত এই সিনেমা ছাড়াও আরও ৯ জন দাপুটে নির্মাতার সিনেমা জায়গা করে নিয়েছে এতে।
বুসানের ২৮তম আসরে ফারুকীর সিনেমাটি ছাড়াও বাংলাদেশের আরও দুটি সিনেমা মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছে। এরমধ্যে ইকবাল এইচ চৌধুরীর ‘দ্য রেসলার’ এবং ‘বিপ্লব সরকারের ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার’। উৎসবের পর্দা উঠবে ৪ অক্টোবর। শেষ হবে ১৩ অক্টোবর।