রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে ছাত্রলীগের একাংশ৷ তারা বলছেন, এ কমিটি বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে৷ এমন অবস্থায় কমিটি ঘোষণার ৪২ ঘণ্টা পার হলেও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে গত শনিবার রাতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে নতুন কমিটিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে ছাত্রলীগের একাংশ নেতাকর্মী৷ পরদিন সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে অবস্থান নেন তারা৷
দফায় দফায় বিক্ষোভ ও শোডাউন দিয়ে নতুন নেতৃত্বকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় ছাত্রলীগের একাংশ। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেন তারা৷ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে বর্তমান সভাপতির অনুসারীকে মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়৷ গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত অবস্থানের পর আজ দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস দখলে নেয় তারা৷
অবস্থানকারী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করে টাকার বিনিময়ে এ কমিটি ঘোষণা করেছে৷ যেখানে একজন এইচএসসি পাস করা ছাত্র, বিএনপি পরিবারের সন্তান ও সনদ জালিয়াতি করে সান্ধ্যকোর্সে ভর্তি হওয়া একজনকে ছাত্রলীগের একটি বড় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগও করেন তারা৷ এছাড়া নতুন এ কমিটিতে পদ পাওয়া বেশিরভাগ নেতারা বিভিন্ন অভিযোগে বিতর্কিত। ফলে এ কমিটি ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ উল্লেখ করে কমিটি বিলুপ্ত চান তারা৷
নবগঠিত কমিটিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছেন বর্তমান কমিটির সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম ডন, তাওহিদুল ইসলাম দুর্জয় ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোরশেদ। এ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকি ও রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি অনিক মাহমুদ বনি।
অবস্থান কর্মসূচি বিষয়ে শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে আমরা অবস্থান করছি। এ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দেয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করবো। নতুন কমিটির কোনো নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না।’
বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্তের দাবি জানিয়ে তাওহিদুল ইসলাম দূর্জয় বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সঠিক নেতৃত্ব ধরে রাখতে স্বচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব প্রয়োজন। সে লক্ষ্যেই আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছি যাতে করে অবাঞ্ছিত নেতৃত্ব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে। এই কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দেয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান অব্যাহত রাখবো। ছাত্রলীগকে সঠিক নেতৃত্ব প্রদান করাই আমাদের লক্ষ্য।’
এ বিষয়ে জানতে সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কয়েকবার কল করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়৷