মাত্র ২৪ বছর বয়সেই চলে গেলেন কলকাতার তারকা মুখ ঐন্দ্রিলা শর্মা। তার প্রয়াণে এখনও শোকার্ত টলিউড। স্মৃতিকাতর সহকর্মীরাও। এরমধ্যেই ঐন্দ্রিলার চিকিৎসক জানালেন কেমন ছিলো এই তারকার শেষ দিনগুলো।
ঐন্দ্রিলার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ে সাত বছর ধরে সঙ্গে ছিলেন তার চিকিৎসক। যার কাছে তিনি শুধু রোগী না, হয়ে গিয়েছিল ‘মেয়ের মতো’। আনন্দবাজার অনলাইনকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘ক্যানসার হলে অনেকেই গোপন করতে চান। ও কোনওদিন সেই পথে হাঁটেনি। কেমো নেওয়ার পর চুল উঠে গিয়েছে, ওভাবেই বাইরে বেরিয়েছে। কোনওদিন পরচুলাও পরেননি।’
প্রথমবার যখন ঐন্দ্রিলার ক্যানসার হয় তখন তিনি ক্লাস ইলেভেনে পড়েন। সেই কথা বলতে গিয়ে ডাক্তার জানান, ‘তখনও ঐন্দ্রিলা অভিনেত্রী হয়নি। হতে চাইত। স্কুলে পড়ে। দারুণ জেদ। অনেক লড়াই করে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে। অভিনয় শুরু করে। স্বাভাবিক জীবনের পথে একটু এগিয়েছে, তখনই ফিরে আসে ক্যানসার। ছ’বছর পর দ্বিতীয়বার ক্যানসার ফেরত এল ওর শরীরে।’
দ্বিতীয়বার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় ফুসফুসে একটি জটিল অস্ত্রোপচারও হয় ঐন্দ্রিলার। বাদ যায় আধখানা ফুসফুস। সেই প্রসঙ্গে ডাক্তার জানান, ‘‘ওটা এতটাই জটিল ছিল যে, ঐন্দ্রিলা অপারেশন থিয়েটারের টেবিলেই মারা যেতে পারত। অস্ত্রোপচারের আগে সে কথা খোলাখুলি বলেছিলাম। মৃত্যু হতে পারে, সে কথাও! তবে ও কান দেয়নি। এক মুহূর্ত না ভেবে বলেছিল, ‘আপনি ওটি করুন’!’’
কলকাতার এক বেসরাকরি হাসপাতালে ক্যানসারের বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন এই ডাক্তার। জানালেন, ‘ঐন্দ্রিলার মতোই মনের জোর ছিল ওর পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের। তারাও সমান ভাবে লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছেন।’
তিনিই জানান, শেষ দিনগুলিতেও মনের জোর হারাননি ঐন্দ্রিলা। ২০ দিন ধরে সমানে লড়ে গিয়েছিলেন। কখনও চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছে। একটু ভাল হয়েছে। আবার অবনতি! তবে শেষের দিকের কার্ডিয়্যাক আরেস্টগুলো আর সামলাতে পারেনি মেয়েটা। চলে গেল।
ঐন্দ্রিলাকে ‘ট্রু স্টার’, ‘ট্রু ফাইটার’ বললেন তার চিকিৎসক। তার কথায়, ‘‘লড়াইয়ের ময়দানে কখনও না কখনও, কোনও না কোনও ‘ফাইটার’-কে থামতে তো হয়ই!’’