দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত সহিংসতা, লুটপাট, ভাংচুরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন। ঝিনাইদহ জেলায় একজন সংখ্যালঘুকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান জোটের নেতারা। বিগত সময়গুলোতে দেশের সব ব্যবসা বানিজ্যে মাফিয়া লুটেরা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণের যে সংস্কৃতি তা এখনো অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
রোববার ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সভায় জোটের নেতৃবৃন্দ এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সভায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনে দুর্ভোগে নেমে এসেছে। ব্যাংকিং খাতগুলো অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এজন্য ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা দরকার।
তিনি বলেন, মানুষের জীবন -জীবিকা সংকোচনের পাশাপাশি জাতীয় জীবনে নানান ধরনের সংকট দেশবাসীকে হতাশায় নিমজ্জিত করছে। ইতোমধ্যে দেশের অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশের মধ্য দিয়ে যে সব তথ্য উপাত্ত সামনে আসছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও হতাশার বলেন তিনি। নারী নির্যাতন ও মাদকের বাণিজ্য গড়ে উঠার দায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অছাত্র ও বহিরাগতরা বছরের পর বছর কিভাবে অবস্থান করে তা খুঁজে বের করা দরকার।
সভায় বক্তারা বলেন, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় আবারও গণধর্ষণের ঘটনায় আমাদের ব্যথিত করছে, আমাদের প্রশ্ন হলো কোন পথে হাঁটছে দেশ। মূলত নীতি-নৈতিকতাহীন ও অশোভন কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই এই সব লম্পটরা। এরা দীর্ঘ সময় ধরে দেশে মাদক থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাদের অপকর্ম চালিয়ে এখন সভ্যতার সকল সীমানা অতিক্রম সমাজে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। আমরা সকল প্রকার নারী-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ে শাস্তির দাবি জানাই, মাদক চোরাচালানসহ এদের গডফাদারদের তালিকা প্রস্তুত করে এদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির দাবি জানান তারা।
তারা আরও বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা, স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখা ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নিয়ন্ত্রণে সরকারের এখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। পাশাপাশি সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের সীমানায় মর্টার সেলে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা দেশের স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অসহিষ্ণু করে তুলবে বলেও সভায় মন্তব্য করা হয়। তাছাড়া মিয়ারমারের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের সোচ্চার হতে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়।
সভায় আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সমাজের সব শ্রেণীর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ডা, সারওয়ার আলী, এস এম এ সবুর, এডভোকেট রানা দাদগুপ্ত,রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, কাজল দেব নাথ, জয়ন্তী রায়, ডাক্তার অসিত বরন রায়, অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন,, , সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, জহিরুল ইসলাম জহির, অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, আলোক দাস গুপ্ত, রেজাউল কবির, ইয়াসরেমিনা বেগম সীমা,রিয়াজুল ইসলাম লিটন,হান্নান চৌধুরী, সাজেদুল আলম রিমন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল ওয়াহেদ, আজিজুর রহমান, গৌতমশীল, আমান উল্যা আমান,প্রমূখ।