চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল মতিনকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহেদীবাগে চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটে সিন্ডিকেটের ৫৪৮তম (জরুরি) সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে রাত দশটায় অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আবুল মনছুর ও মোহাম্মদ আলী।
চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটে সিন্ডিকেটের সদস্যরা জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সুপারিশে ওই শিক্ষককে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা ৫ কর্মদিবসের মধ্যে ওই অধ্যাপককে ব্যাখ্যা দিতে বলা হবে। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর অপসারণের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী অধ্যাপক মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দেয়।
চিঠিতে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, তিনি অভিযুক্ত অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে স্নাতকোত্তরের থিসিস করছেন। থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকেই অধ্যাপক তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে। ল্যাবে ও নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে একাধিকবার ওই অধ্যাপক তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে অতর্কিতে হাত দেওয়া, জড়িয়ে ধরাসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন করে আসছেন।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, ৬ জানুয়ারি তাকে ল্যাবে একা পেয়ে ওই শিক্ষক যৌন নিপীড়ন করেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন মাহবুবুল মতিন।
এ ঘটনা যেন প্রকাশ না করে এজন্য ওই শিক্ষক তাকে ও তার সহপাঠীকে নানাভাবে হুমকি দেন ও হয়রানি করেন বলে উল্লেখ করে ওই ছাত্রী জানান, এই অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তার পক্ষে আর থিসিসের কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
এরপর থেকেই ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী অপসারণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশ ও ছাত্র ইউনিয়নসহ বাম ধারার সাত সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।