বাংলাদেশে মাদক ব্যবহারের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলো কমানোর জন্য কাজ করে যাওয়া হার্ম রিডাকশন প্রোগামের রজতজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। যারা মাদকসেবন করেন, গত ২৫ বছর ধরে তাদের এইচআইভি বিস্তার রোধ এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও জীবিকা উন্নত করেছে এই কর্মসূচি।
শনিবার ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীর বারিধারায় একটি হোটেলে ইউএনএইডস ও এনপিইউডি’সহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ‘সিলভার জুবিলি অব হার্ম রিডাকশন প্রোগ্রাম’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
যুগান্তকারী অর্জনের উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের এইচআইভি বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডস এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সায়মা খান।
দিনব্যাপী আয়োজনে হার্ম রিডাকশন প্রোগ্রামে কাজ করা প্রবীণ, সৎ ও গত হয়ে যাওয়া কিছু মাঠকর্মীদের সম্মাননা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। নেটওয়ার্ক অফ পিপল হু ইউজ ড্রাগস (এনপিইউডি) প্রোগ্রামের পেছনের স্বপ্নদর্শীদের সম্মান জানাতে, অতীতের বিজয়গুলোকে সামনে আনতে এবং ভবিষ্যতে ক্ষতি কমানোর জন্য সম্মিলিত সংকল্পকে তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আর্থিক ও প্রযুক্তিগতভাবে সহায়তা করেছে ইউএনএইডস এবং ইউএনওডিসি। অনুষ্ঠানে মাদকসেবীদের নিয়ে কাজ করার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে এনপিইউডি, এনজিও, ইউএন এবং সরকারি বিভাগগুলো। কমিউনিটির অংশগ্রহণে ‘আমরা করবো জয় একদিন’ স্লোগানে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে মাদকসেবীদের দেখতে হবে। সামাজিক, পারিবারিক ও সরকারি পর্যায়ে তাদের বিশেষ সাহায্য প্রয়োজন। আমাদের সবাইকে তাদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রে জন্ম থেকেই বেঁচে থাকার সম্মানজনক অধিকারের কথা উল্লেখ রয়েছে।
তিনি বলেন, মাদকসেবীদের একাংশ এইচআইভি সংক্রমণের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী। আমাদের সমন্বিত, মানবিক ও গবেষণাধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবা লাভ করা মৌলিক অধিকার। স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা ও জনসেবা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অত্যন্ত সোচ্চার।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পিএলএইচআইভি নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক হাফিজউদ্দিন মুন্না, নপুড এর সভাপতি মো. রাশেদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি সাহেদ ইবনে ওবায়েদ ছোটন, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার পল্টু, এইচআইভি/ এইডস নিয়ে কাজ করা জাতীয় কনসালটেন্ট মো. ওমর ফারুক, জাতিসংঘের মাদক বিষয়ক সংস্থার বাংলাদেশ অফিসের কর্মকর্তা আবু তাহের, কেয়ার বাংলাদেশ প্রতিনিধি, নার্কটিকস কন্ট্রোল অধিদপ্তরের পরিচালক এবং জাতীয় এইডস এসটিডি প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।