মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামানকে হত্যার ২ হুমকিদাতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার ১৬ আগস্ট রাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট হুমকিদাতা একজন হাফিজা মাহবুবা বৃষ্টিকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সাঈদীর চিকিৎসকের দায়েরকৃত জিডিতে অভিযুক্ত হাফিজা মাহবুবা বৃষ্টিকে (৩২) রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আরেক হুমকিদাতা তফসিরুল ইসলামকে (২৩) ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব।
বুধবার রাতে র্যাবের সহকারী পরিচালক এএসপি আল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামানকে হত্যার হুমকিদাতা তফসিরুল ইসলামকে (২৩) ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে। গ্রেপ্তারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে।
এর আগে হত্যার হুমকির বিষয়ে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) মধ্যরাতে নিজে ধানমন্ডি মডেল থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ডা. মোস্তফা জামান।
ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন: অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামানকে প্রাণনাশের হুমকির বিষয়ে তিনি থানায় হাজির হয়ে একটি জিডি করেছেন। জিডিতে তিনি ফেসবুক গ্রুপ ও ম্যাসেঞ্জারে হুমকির বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গত ১৩ আগস্ট দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেশকাত আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বিএসএমএমইউতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ছিলেন ডা. মোস্তফা জামান।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এরপর আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিল আংশিক মঞ্জুর করে বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের মতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাঈদীর বিরুদ্ধে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হলে ২০১৭ সালের ১৫ মে আবেদন খারিজ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
২০১৯ সাল থেকে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ২০১০ সালের ২৯ জুন রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।