বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসরের পর্দা নেমেছে আজ । প্রায় দেড় মাস ধরে চলা মহাযজ্ঞের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরচুন বরিশাল। এবারের আসরে দেশীয় খেলোয়াড়েরা দারুণ আলো ছড়িয়েছেন, বল করেছেন দুর্দান্ত। ফলাফল, আসরের সেরা দশ বোলারের আটজনই বাংলাদেশের।
মিরপুরে বল হাতে দাপট দেখিয়েছে বোলাররা, উইকেটের আনন্দে মেতেছে ঢাকা। তবে সিলেট এবং চট্টগ্রামের চিত্রটা ভিন্ন, ব্যাটাররা অনেক রান পেয়েছেন। মিরপুরের বাজে উইকেটের আক্ষেপ ঘুচেছে ঢাকার বাইরে গিয়ে। এবারের আসরে উইকেট নেয়ার ক্ষেত্রে সেরা দশে কারা আছেন এক ঝলকে দেখে নেয়া যাক।
এবারের আসরের সবচেয়ে সফল বোলার দুর্দান্ত ঢাকার শরিফুল ইসলাম। দল মাত্র একটি জয়ে টেবিলের তলানিতে থাকলেও বাঁহাতি এ পেসার নিয়েছেন আসরের সবচেয়ে বেশি উইকেট। পুরো আসরে ১২ ম্যাচে ৪৪.৪ ওভার বল করেছেন, উইকেট নিয়েছেন ২২টি। গড় ১৫.৮৬ এ ইকোনোমি ৭.৮১। ২৪ রান দিয়ে ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন। আসরে মোট ৩৪৯ রান দিয়েছেন, বল করেছেন ২৬৮টি।
আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী টাইগারদের টি-টুয়েন্টি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি শরিফুলের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি বা ১৩ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ইনিংস সেরা ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। গড় ১৭.৭৬ এবং ইকোনোমি ৬.৩১। তিনি মোট ৪৭.৫ ওভার বল করে একটি মেডেন নিয়েছিলেন, রান দিয়েছিলেন ৩০২। সবমিলিয়ে বল করেছেন ২৮৭টি।
আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ১৪ ম্যাচ খেলা ডানহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান। ৪০.২ ওভার বল করে এ স্পিনার নিয়েছেন ১৬ উইকেট, দিয়েছেন সবমিলিয়ে ২৯৮ রান। তার ইনিংস সেরা বোলিং ফিগার ১১ রানে ৩ উইকেট। গড় ১৮.৬২ এবং ইকোনোমি ৭.৩৮ করে। এক ওভার মেডেনসহ মোট ২৪২ বল করেছেন।
সেরা চারে আছেন দীর্ঘদিনের চোট কাটিয়ে বরিশালে ফেরা পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ফাইনাল ম্যাচসহ তিনি মোট ৯টি ম্যাচে খেলে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। ১৫.৬৬ গড়ে এবং ৬.৮১ ইকোনোমিতে মোট বল করেছেন ৩৪.৩ ওভার। রান দিয়েছেন ২৩৪টি। তার ইনিংস সেরা বোলিং ফিগার ২১ রানে ৩ উইকেট।
সেরা পাঁচে প্রথম বিদেশি বোলার ওমানের বিলাল খান। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বাঁহাতি এ পেসার আসরে ১৫ উইকেট নিয়ে আছেন সেরা পাঁচে। তিনি সেরা দশে সবচেয়ে বেশি ৩৯১ রান দিয়েছেন, বল করেছেন ৪৯.২ ওভার। ২৬.০৬ গড়ে ৭.৯২ ইকোনোমিতে তার সেরা বোলিং ফিড়ার ২৪ রানে ৩ উইকেট। ১৩ ম্যাচ খেলে মোট বল করেছেন ২৯৬টি।
ছয়ে থাকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম এবারের আসরে খেলেছেন ১৩ ম্যাচ, ১২ ইনিংসে বল করে উইকেট নিয়েছেন ১৩টি। তার ইকোনোমি৭.৪৯ এবং গড় ২০.৮৪। পুরো আসরে বল করেছেন ৩৬.১ ওভার, রান দিয়েছেন ২১৭। সেরা বোলিং ফিগার ১৩ রানে ৪ উইকেট।
সেরা দশের সাতে আছেন দুর্দান্ত ঢাকার পেসার তাসকিন আহমেদ। ১২ ম্যাচ খেলে তাসকিন নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ২৭ রানে ২ উইকেট তার সেরা বোলিং ফিগার। বল করেছেন ৪৪ ওভার।
রংপুর রাইডার্সের ডানহাতি পেসার হাসান মাহমুদ আছেন তালিকার আটে। ১৪ ম্যাচ খেলা হাসান মোট ৪৩ ওভার বল করে দিয়েছেন ৩৭১ রান নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ২৯ রানে ৩ উইকেট তার সেরা বোলিং ফিগার।
ফরচুন বরিশালের ওবেদ ম্যাককয় আসরের দ্বিতীয় বিদেশি খেলোয়াড় যে সেরা দশে রয়েছেন। তিনি অন্যদের তুলনায় খেলেছেন কম ম্যাচ। মাত্র ৮ ম্যাচ খেলে বাঁহাতি এ পেসার নিয়েছেন ১২ উইকেট, দিয়েছেন ২৬১ রান। ৩৪ রানে ৩ উইকেট তার সেরা বোলিং ফিগার।
সেরা দশের সবশেষ বোলারের নাম বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ফাইনালসহ ১৫ ম্যাচ খেলা মিরাজ আসরে ৩১.৪ ওভার বল করে ১১ উইকেট নিয়েছেন। ২৪ রানে ৩ উইকেট তার সেরা বোলিং ফিগার। তার বোলিংয়ে একটি মেডেন ওভারও রয়েছে। সবমিলিয়ে দিয়েছেন ১৯০ রান।