সদ্য নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া বলিউডের সিনেমা ‘খুফিয়া’-তে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আজমেরী হক বাঁধন। যে চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য অসংখ্য মানুষের শুভেচ্ছাবার্তা পাচ্ছেন তিনি।
শুধু সাধারণ দর্শক নয়, বাংলাদেশ-ভারতের শোবিজ অঙ্গনের বহু মানুষ প্রশংসা করছেন বাঁধনের। প্রায় সবাই বলছেন, বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত ‘খুফিয়া’-তে টাবুর সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন বাঁধন!
সিনেমায় হিনা রহমান নামে বাংলাদেশের এক গুপ্তচরের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাঁধন। যেটি তিনি আকর্ষণীয় ও সুক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
তবে ‘খুফিয়া’ সিনেমায় বাংলাদেশকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা নিয়েই অনেকেই সমালোচনা করছেন। কেউ আবার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আরোপ করে সিনেমাটির ব্যবচ্ছেদ করছেন। এমনকি এর আগে এই সিনেমা নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ পেয়েছিল।
এসব বিষয় মোটেও গায়ে লাগাচ্ছেন না বাঁধন। তিনি বলেন, সবাই আমার পারফর্মেন্স এবং টাবুর সঙ্গে কেমিস্ট্রির প্রশংসা করছেন। এখানে প্রতিটি চরিত্রের প্রশংসা দেখতে পাচ্ছি। আমি কোনো সমালোচনা পাইনি। কী কী নিউজ এসেছিল এগুলো নিয়ে আগে কোনো মন্তব্য করিনি, এখনও করবো না।
সমলিঙ্গের প্রেম, ‘র’-এর সাথে সম্পৃক্ততা; এরকম স্পর্শকাতর একটি চরিত্র বেছে নিতে মানসিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁধন বলেন, একজন অভিনেতা হিসেবে যেভাবে প্রস্তুতি নিতে হয় সেভাবে নিয়েছিলাম। যে চরিত্রটি করেছি সেটির মানসিক, আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান কেমন সেটি জেনে বুঝেই ধারণ করার চেষ্টা করেছি। সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিতে হয়েছে টাবুর মতো একজন অভিনেত্রীর সামনে ঠিকভাবে অভিনয়ের সাহস করা।
‘দর্শক যেহেতু আমাদের কেমিস্ট্রি পছন্দ করছে এজন্য মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জটা ঠিকভাবে করতে পেরেছি। তিনি (টাবু) কৃষ্ণা মেহরা হয়ে শুটিং সেটে এসেছেন। অক্টোপাসের সঙ্গে কৃষ্ণা মেহরার যেমন বিহ্যাভ করার কথা তেমনই করেছেন। অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রির জন্য অফস্ক্রিন কেমিস্ট্রির দরকার না। প্রেমের দৃশ্য করতে গেলে আগে প্রেম করতে হবে সেদিন এখন আর নাই। দুনিয়া অনেকদূর এগিয়েছে। মুক্তির পর থেকে আমার কিছু দর্শক শ্রেণী আছে তারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভীষণ সাপোর্ট করছেন। সহকর্মী থেকে ইন্ডিয়ান গণমাধ্যমেও লেখালিখি হচ্ছে। এগুলো আমার কাছে ভালো লাগছে।’ -বলছিলেন বাঁধন।
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ বাঁধনের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। এই ছবি দিয়ে তিনি কান পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছেন। কিন্তু ‘খুফিয়া’তে স্ক্রিনে স্বল্প সময়ের উপস্থিতি, কেন? এ বিষয়টি তুলে ধরেও অনেকে সমালোচনা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে বাঁধন বলেন, ‘হ্যাঁ স্বল্প উপস্থিতির এই কাজটি করবো কিনা শুরুতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া আমার জন্য কঠিন ছিল। কারণ, আমি সবসময় লিড ক্যারেক্টার করেছি। এখন মনে হচ্ছে খুফিয়াতে যুক্ত হওয়া আমার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ, এই কাজ দিয়ে আমি অনেক সমৃদ্ধ হয়েছি।’
এই সমৃদ্ধ হওয়া কি বেশি দর্শকদের কাছে পৌঁছুতে পারা? উত্তরে বাঁধন বলেন, মানুষ হিসেবে আমি এবং অভিনয় দুটোই আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। এটা আমার সারাজীবন কাজে লাগবে। তবে এর আগে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দিয়ে আমি আগেই ওয়ার্ল্ডের দর্শকদের কাছে পৌঁছেছি। আমাকে আরও বেশি এক্সপোজ করে সৃজিতের ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ এবং চরকির ‘গুটি’। দেশের বাইরে অনেক মানুষ দেখেছেন।