মুক্তির প্রতীক্ষায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত বায়োপিক ‘মুজিব’। বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমাটির প্রথম অফিশিয়াল পোস্টার উন্মোচন হলো বৃহস্পতিবার। যে সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। অভিনেতা হিসেবে এটি ‘জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন’ বলে মনে করছেন তিনি।
মহান নেতার চরিত্র নিয়ে পর্দায় হাজির হওয়াটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বলে জানালেন আরিফিন শুভ। চলতি বছর ‘মুজিব’ ছবিটি মুক্তির কথা আছে। বৃহস্পতিবার ‘মুজিব’-এর অফিশিয়াল পোস্টার উন্মোচনের সময় এফডিসিতে চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি…
‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে পর্দায় সঠিকভাবে উঠে আসা সহজ ছিল?
এটা তো আমি বলতে পারবো না। ছবি দেখার পর দর্শকরা বলবেন। তবে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল স্যার আমার কাজে খুশী হয়েছেন। আমি শুধুমাত্র পর্দায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্র হয়ে আসছি। আমি অভিনয় বলবো না, তার কারণ আছে। আমাকে পরিচালক বলেছিলেন, ‘ডোন্ট কপি হিম’ (তাকে নকল করো না)। তাই আমি বঙ্গবন্ধুকে কপি করিনি। তার দর্শনকে ধারণ করার চেষ্টা করেছি। পরিচালক এও বলে দিয়েছিলেন, একদম তার মতো ওঠা-বসা, কথা বলতে হবে এটা দরকার নেই। এটা করতে গেলে কপি করতে হতো! আমাকে আত্মিক জায়গাটা ধরতে বলেছিলেন। তাই আমি বলতে পারি, তার চরিত্র নিয়ে পর্দায় আসছি।
দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের জন্য প্রস্ততি নিয়েছিলেন। চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে নিশ্চয়?
অভিনয়তো প্রিটেন্ট করা, আরেকটা হচ্ছে বিং (হওয়া)। দুটো দুই জিনিস। একটা হচ্ছে ওনার মতো অভিনয় করা আরেকটা হচ্ছে ওনার মতো ভেবে কিছু একটা রিফ্লেক্ট করা। এই কারণে আমার মানসিক ও শারীরিক প্রচুর প্রভাব পড়েছে। লম্বা সময় এই মানুষটাকে নিজের মধ্যে ভর করে নিজের মতো ডিগবাজী খেয়েছি। এ কারণে আমার মধ্যে একটা রেশ থেকেছে। শ্যাম বেনেগাল স্যার মজা করে বলছিলেন, ‘আর্তি করে তোমার মধ্যে থেকে এই ক্যারেক্টার বের করতে হবে। নাহলে স্বাভাবিক জীবনে তোমার মধ্যে প্রবলেম হবে।’
এই সিনেমাটি বানানোর জন্য একমাত্র শ্যাম বেনেগালই পারফেক্ট ছিলেন? অন্য কোনো অপশন ছিল কিনা বা আমাদের দেশ থেকে অন্য কেউ বানাতে পারতেন বলে মনে করেন?
খুব সুন্দর প্রশ্ন। বিষয়টি আমি আমার মতো করে উত্তর দিচ্ছি। একই উপাদান একেকজন রাঁধুনি একেকভাবে রান্না করেন। তাদের প্রত্যেকের রান্নার স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন হবে। এর মানে এই নয় যে, একজনের রান্না পাঁচ জনের ভালো লাগবে; আরেকজনেরটা অন্যদের কাছে খারাপ লাগবে। বিষয়বস্তু হচ্ছে – কাজটির জন্য প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর বিচক্ষণতা দিয়ে মনে করেছেন, তাঁর বাবা অর্থাৎ আমাদের সমগ্র জাতির পিতার জন্ম থেকে মৃত্য পর্যন্ত সবকিছু শ্যাম বেনেগাল হয়তো ঠিকভাবে তুলে আনতে পারবেন। যারা যারা শ্যাম বেনেগালের কাজ দেখেছেন তারা জানেন উনি বায়োগ্রাফি নির্মাণের মাস্টার। কিন্তু বিষয়টি এমন নয় যে, শ্যাম বেনেগাল ছাড়া অন্য কেউ বানালে ভালো হতো!
শুটিংয়ের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শুটিং শেষে তার সঙ্গে দেখা হয়েছে?
উনি অনেক ব্যস্ত একজন মানুষ। তাছাড়া তাঁর সঙ্গে আমার সরাসরি দেখা হওয়ার কথাও নয়। আর আমি শুধুমাত্র তাঁর বাবার চরিত্রে পর্দায় এসেছি মাত্র। তবে আশা করি এই ছবির ফাইনাল ভার্সনটা উনি যেদিন দেখবেন তারপর যদি কখনও তাঁর সঙ্গে দেখা হয় আমি চাইবো উনি কাজটি নিয়ে কিছু বলুক আমাকে। এর আগে যেদিন আব্বা বলে ডেকেছিলেন সেদিন বলেছিলেন, ‘কাজটা ভালো কইরা কইরো’। ভালো করে করতে পেরেছি কিনা এটা তাঁর কাছে শোনার আকাঙ্ক্ষাটা আমার মধ্যে আছে।