৪ আগস্ট উত্তরার একটি শুটিং বাড়িতে নাটকের শুটিংয়ে নির্মাতা ও সহশিল্পীদের সঙ্গে বাজে আচরণ ও মিথ্যে অভিযোগ আনার প্রেক্ষিতে অভিনেত্রী রোকাইয়া জাহান চমককে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টর গিল্ডস।
এমন সিদ্ধান্তের ঠিক দু’দিন পর অভিনয়শিল্পী সংঘ এক বিজ্ঞপ্তিতে চমক ইস্যুতে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে। একই সঙ্গে ডিরেক্টরস গিল্ডের সিদ্ধান্তকে অপ্রত্যাশিতও বলেও উল্লেখ করে।
বুধবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিনয়শিল্পী সংঘ জানায়,“ডিরেক্টরস গিল্ড এর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা আমাদের বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে । দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড এর কাছ থেকে যা মোটেই আমরা প্রত্যাশা করি না। যেহেতু সংবাদ সম্মেলনে টেলিপ্যাব ও অভিনয়শিল্পী সংঘের নাম উচ্চারিত হয়েছে তাই প্রাসঙ্গিক কারণেই কিছু কথা আমাদের বলতে হচ্ছে। যা আমরা কখনোই সর্বসাধারণের সম্মুখে বলতে চাইনি!”
ডিরেক্টরস গিল্ডের কাছে বিজ্ঞপ্তিতে প্রশ্ন রেখে বলা হয়,“ডিরেক্টরস গিল্ড একজন অভিনয়শিল্পীকে নিষিদ্ধ করবার অধিকার রাখে কিনা? যদি তারা তাদের সদস্যদেরকে রুকাইয়া জাহান চমককে কাজে না নেবার নির্দেশ দিতে চাইতো তবে তা সাংগঠনিক ভাবে করতে পারতো। তার জন্য সংবাদ সম্মেলনের প্রয়োজন ছিলো কিনা! এটা খুবই সাধারণ বিষয় যে একটি পেশাদার সংগঠন শুধুমাত্র তার সংগঠনের সদস্য ছাড়া অন্য কোনো পেশার শিল্পী, কলাকুশলী বা ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনতে পারে না! নিতান্ত প্রয়োজন হলে সেই পেশার সংগঠনের সাথে আলোচনা করতে পারে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়,“সংগঠন কোন কোট কাচারী-আইন আদালত নয়। সংগঠনকে সদস্যরা ভয় পাবে না-ভালোবাসবে-নিরাপদ আশ্রয় মনে করবে। কেউ কেউ কখনো কখনো ভুল করতে পারে, অন্যায় করতে পারে। আমরা তাকে সংশোধন এর চেষ্টা করবো, সঠিক পথ বাতলে দেবার চেষ্টা করবো। কিন্তু কখনোই গলা টিপে ধরবো না। ভুল শুধরে নেবার, সংশোধন হবার যথেষ্ট সময়, সুযোগ পাওয়া স্বত্বেও কেউ যদি সংশোধন না হয় তখন হয়তো সংগঠন কঠোর হতে পারে। তার আগে নয়।”
সমস্যার সূত্রপাত হয় গেল ৪ আগস্ট। সেদিন আদিব হাসান পরিচালিত একটি নাটকের সেটে চমকের দেরি করে উপস্থিত হওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। জানা যায়, তিনি শুটিংয়ে সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। এমনকি সিনিয়র শিল্পী মাসুম বাশার এবং সহ অভিনেতা আরশ খানকেও ছেড়ে কথা বলেননি। সেটে পুলিশও আসে।
এরপর আদিব হাসান ডিরেক্টরস গিল্ডের কাছে অভিযোগ করেন। অন্যদিকে চমকও অভিনয়শিল্পী সংঘের কাছে অভিযোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় আলোচনায় বসে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব), ডিরেক্টরস গিল্ড ও অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতারা।
সংগঠন তিনটি গত ১৩ আগস্ট বিকেলে সমস্যাটির সমাধানের লক্ষ্যে বসে। এ সময় অভিযোগকারী চমক ও নির্মাতা আদিব হাসানের অভিযোগ শোনা হয়। সেই সঙ্গে সাক্ষী হিসেবে অভিনেতা আরশ খানের বক্তব্য শোনেন সংগঠনের নেতারা।
এরপর গত ১৪ আগস্ট অভিনয়শিল্পী সংঘ এক বার্তায় সভার সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে পাঠায়। সেখানে অভিনেত্রী চমককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কিন্তু গত ২১ আগস্ট পুনরায় সংবাদ সম্মেলন করে চমককে তিন মাস নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত জানায় ডিরেক্টরস গিল্ড।