সিকিমে ভ্রমণে গিয়ে ঘুরতে না পেরে আতঙ্ক নিয়ে বাড়ি ফিরলেন বহু পর্যটক। কলকাতাসহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অনেক পর্যটকই উত্তর সিকিমের সেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে আগে ঘুরে এসেছেন। আবার অনেকে গিয়ে এখন নিখোঁজ। ঝাড়গ্রামের একই পরিবারের পাঁচ সদস্য এখনও নিখোঁজ রয়েছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকেই।
শুক্রবার ৬ অক্টোবর হিন্দুস্তান টাইমসের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, সিকেমে বন্যার ঘটনায় ভেসে উঠছে মৃতদেহ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সিকিমে বড় বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন অনেকেই। কেউ কেউ বলেন, ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে এলেন। তিস্তার ভয়ালরূপ আর পাহাড়ের যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে তা সহজে ভোলার নয়। আর এই মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং প্রকৃতির ভয়াবহতায় স্বাক্ষী হলেন তারা।
অন্যদিকে বিপর্যস্ত সিকিমে সময় যত গড়াচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে ধ্বংসের ছবি। চারিদিকে শুধুই হাহাকার। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বাড়ছে আতঙ্ক। ২৪ ঘণ্টা পরেও নামছে ধস। আর তার জেরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক রাস্তা। চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী খরস্রোতা তিস্তায় চলছে উদ্ধারকাজ।
সেনাবাহিনীর ক্যাপ ভেসে গিয়ে ২৩ জন সৈন্য নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের কারও মৃতদেহ এদের মধ্যে আছে কিনা তা জানা যায়নি।
সিকিম প্রশাসন বলছে, বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদের উপর। তার জেরে ফেটে যায় লেক। আর সাথে সাথে পানি নেমে আসে তিস্তায়। তখন থেকেই চলে ধ্বংসলীলা।
অন্যদিকে, তিস্তার পানি যত নেমে এসেছে তত মৃতদেহ ভেসে উঠেছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। গাজলডোবা, ময়নাগুড়ি, কোটওয়ালি, কুচলিবাড়ি, হলদিবাড়ি ও মিলনপল্লি এলাকায় একাধিক দেহ উদ্ধার হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে লাচেন এবং লাচুংয়ে প্রায় তিন হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিকিমের মুখ্যসচিব বিজয় ভূষণ পাঠক বলেন, ‘৭০০ থেকে ৮০০ গাড়িচালক আটকে রয়েছেন। তিন হাজার ১৫০ জন মোটরসাইকেল আরোহীও আটকে বিপর্যস্ত এলাকায়। সেনা এবং বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সমতল থেকে সিকিমে যাওয়ার ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পানির চাপে ভেঙে গিয়ে বিচ্ছিন্ন এখন। তবে আলগাড়া-পেদং-লাভা-গরুবাথান হয়ে সমতলে আসা যাচ্ছে। সিকিম পুলিশের ডিআইজি তাশি ওয়াঙ্গেল বলেন, ‘১০ নম্বর জাতীয় সড়কের মেরামতের কাজ চলছে। মাল্লি, বুরদাং, লিকুভিড়, শ্বেতীঝোড়ায় কাজ চলছে।’