ফিল্ম সাউথ এশিয়ার দশম আসরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অংশ নিচ্ছে ঐতিহ্যবাহী প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘ক্ষতচিহ্ন’। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে ৩০০ চলচ্চিত্রের মধ্যে বাছাই করা ৪৫ টি চলচ্চিত্রের তালিকায় রয়েছে প্রামাণ্যচিত্রটি। আগামী ০২ থেকে ০৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ এশীয় প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব। প্রতি দুই বছর পরপর এ চলচ্চিত্র উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র ও চারুকলা বিভাগের নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘ক্ষতচিহ্ন’ এর গবেষণা ও পরিচালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের চলচ্চিত্র ও চারুকলা বিষয়ক সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ। উৎসবে অংশ নেয়ার জন্য ফিল্ম সাউথ এশিয়ার পক্ষ থেকে ‘ক্ষতচিহ্ন’-এর গবেষক ও পরিচালক প্রদীপ ঘোষকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রদীপ ঘোষ চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, প্রগতিশীলতার ওপর প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী ধারাবাহিক হামলার স্বরুপ এ ২৩ মিনিটের এই প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। প্রামাণ্যচিত্রটি উদীচী দেশের প্রতিটি জেলায় দেখাবে।
ফিল্ম সাউথ এশিয়ার ২০তম বছরে উৎসবে প্রদর্শনের জন্য তিন শতাধিক চলচ্চিত্র জমা দেয়া হয়। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক নির্বাচকমণ্ডলী ৪৫টি চলচ্চিত্রকে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচন করে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে এই ৪৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে। ৩ নভেম্বর প্রদর্শিত হবে চলচ্চিত্রটি।
১৯৯৯ সালে যশোর টাউন হল ময়দানে আয়োজিত হয় দেশের বৃহত্তম সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলন। তিনদিনের ওই সম্মেলনের শেষ দিনে সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী গোষ্ঠীর বোমা হামলা কেড়ে নেয় দশটি প্রাণ। ওই ঘটনার পরও থেমে থাকেনি প্রগতিশীল শক্তির উপর বোমা হামলা। কখনো হামলা হয় রাজনৈতিক দলের উপর, আবার কখনো সাধারণ মানুষের উপর। ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর আবারো হামলার শিকার হয় উদীচী। নেত্রকোনা জেলা উদীচীর কার্যালয়ে হামলায় আবারো জাতি দেখে সংস্কৃতি কর্মীর লাশ। এসব হামলায় চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন হাজারো মানুষ। সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদী গোষ্ঠীর প্রথম আঘাতটি সংগঠিত হয় উদীচীর উপর এবং এপর্যন্ত শেষ হামলাটিও ছিল উদীচীর উপর। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ পর্যন্ত যে ক্ষতের চিহ্ন দেশবাসী বয়ে বেড়াচ্ছে। তারই ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে এ প্রামাণ্যচিত্রে।