২৫ বছর পর আগামীকাল ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচন মিয়ানমারে। সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে গণতন্ত্রকামী অং সান সু চি’র দলের এগিয়ে থাকার আভাস থাকলেও, নির্ভরযোগ্য নির্বাচনী জরিপের অভাবে তা নিশ্চিত নয়।
সাংবিধানিক বাধার কারণে সু চি প্রেসিডেন্ট হতে না পারলেও, ইঙ্গিত দিয়েছেন সিদ্ধান্ত নেয়ার বেলায় প্রেসিডেন্টের ওপরেই থাকবেন তিনি।
১৯৯০-তে সবশেষ গণতান্ত্রিক নির্বাচন হয়েছিলো মিয়ানমারে। প্রচারণা পর্যায়েই গৃহবন্দি হয়েছিলেন এনএলডি নেতা অং সান সু চি। ভোটের ফল এনএলডি’র পক্ষে এলেও সামরিক সরকার ফল বাতিল করে দেয়।
সংবিধান সংশোধন করে সামরিক শাসন লোপের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। এরপর কেটে গেছে ২৫টি বছর, যার ১৫ বছরই গৃহবন্দি ছিলেন অং সান সু চি।
ভিন্ন সময়, ভিন্ন পরিস্থিতি। ২০১০ থেকেই মুক্ত অং সান সু চি। ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তার দল। সু চি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী হলেও, মিয়ানমারের রাজনৈতিক হিসাবটা বেশ জটিল।
মিয়ানমার পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সামরিক সরকারের জন্য সংরক্ষিত। জয় পেতে বাকি আসনের ৬৭ শতাংশে জিততে হবে সু চি’র দলকে।
সেখানেও প্রধান প্রতিপক্ষ ইউএসডিপি সেনা সমর্থিত দল হওয়ায়, লড়াইটা হবে সু চি বনাম সেনাবাহিনীর মধ্যেই। নির্বাচনী জরিপ নেই। তবে ২০১২এর উপ-নির্বাচনে বড় ধরনের জয় সু চি’র জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চি নিশ্চুপ, কারণ, নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের প্রভাব খুব সামান্যই।
সু চি’র দল যতো বড় ব্যবধানেই জিতুক সংবিধানে বিদেশী নাগরিকত্বধারী স্বামী, স্ত্রী কিংবা সন্তানধারীর প্রেসিডেন্ট হওয়াতে বাধা আছে। আর তাই এ দফায় সু চি’র প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ নেই।
তবে তাতে অং সান সু চি’র দুঃখ নেই। নির্বাচনী প্রচারের সময় জানিয়ে দিয়েছেন, জিতলে প্রেসিডেন্টের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হবেন না তিনি।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন আগামী মার্চে, পার্লামেন্টে। উচ্চকক্ষ, নিম্ন কক্ষ ও সামরিক সরকার মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে একজন হবেন প্রেসিডেন্ট।
প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্রের মতো মন্ত্রণালয় আর সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকবে সামরিক বাহিনীর হাতে। আর তাই মিয়ানমারের আসল ক্ষমতা থেকে যাবে সেনাবাহিনীর কাছেই।