হঠাৎ করে দমকা হাওয়া প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের প্রকোপ বেড়ে গেছে সারাদেশে। রাজধানীতে সকাল থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টিসহ হাড় কাঁপানো শীতের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারা দেশে।
চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ।
শুক্রবার আরও কয়েকটি জেলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়বে, যা আগামী রোববার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে শীতের প্রকোপে দুর্ভোগে পড়েছে দরিদ্র-দুস্থ মানুষ। শীতজনিত নানা রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতার্ত দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি পর্যায়েও তেমন উদ্যোগ নেই।
ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ এক দিন আগে তা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শুক্রবার রাজধানীতে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
শীত জেঁকে বসায় গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বারিধারাসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে শীতের পোশাক কিনতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, গত বুধবার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকে। গতকাল তা আরও প্রকট হয়। তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই হিসাবে দেশের কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার সারা দেশেই শীত আরেকটু বাড়বে। সঙ্গে কুয়াশা থাকবে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহে আক্রান্ত হবে আরও কয়েকটি জেলা। রোববারের পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে।
ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরে হাওয়ায় পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। গতকাল জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়িয়ে তুলছে। আকাশ থাকছে কুয়াশার চাদরে ঢাকা।
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত নীলফামারীর সৈয়দপুরের জনজীবন। গতকাল সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে।
দিনাজপুরে শীতের প্রকোপে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। মৃদু শৈত্য প্রবাহ আর হিমেল হাওয়ায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাতাসের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ।
এদিকে শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে কয়েকদিন পর চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা আরও কমে আসতে পারে বলে জানা গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, চুয়াডাঙ্গা শীতার্ত মানুষের জন্য ত্রাণ ভান্ডার থেকে ২৬ হাজার কম্বল এসেছে। যা চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় বিতরণ করা হচ্ছে।