বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে সাবেকরা কেনো ফেভারিট তকমা দিচ্ছেন, প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেই তা বুঝিয়ে দিল অ্যারন ফিঞ্চের দল। সম্প্রতি ক্রিকেট মাঠে প্রতাপশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছে অজিরা। জয়ের ভিত সৌজন্য এসেছে সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের থেকে। দুর্দান্ত শতরান করেছেন।
বিরুদ্ধে কঠিন পিচে ৯ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৯৭ রান তোলে অজিরা। জবাবে ইংলিশদের ইনিংস শেষ হয় ২৮৫ রানে। স্মিথ-ওয়ার্নাররা ম্যাচ জেতে ১২ রানে।
বিশ্বকাপেই নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই শুরু করে দিলেন স্মিথ। একসময় যাকে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে তুলনা করা হত সেই সম্মান হারিয়ে গেছে বল টেম্পারিংকাণ্ডে জড়িয়ে। হারিয়ে যাওয়া সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য এর থেকে ভালো মঞ্চ আর কিছু হতে পারে না!
বল টেম্পারিংয়ের ঘটনা তার ক্যারিয়ারকে জোড় ধাক্কা দিয়েছিল। নিষিদ্ধ হতে হয়েছিল এক বছরের জন্য। হারাতে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব। তিনি মেনে নিয়েছিলেন এই নির্বাসন, যা তাকে তছনছ করে দিয়েছিল। কিন্তু সবকিছু সামলে এখন স্মিথ নিজেকে ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে তৈরি।
এদিন চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১০২ বলে ১১৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন স্মিথ। ইনিংস সাজানো ৮টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারিতে। নির্বাসন কাটিয়ে দেশের জার্সি গায়ে চাপানোর পর এটাই প্রথম শতরান স্মিথের। এর আগে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে দুটি ইনিংসে অপরাজিত ৮৯ ও ৯১ রান করেছিলেন তিনি।
স্মিথ ছাড়াও স্যান্ড পেপার কেলেঙ্কারির কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া আরেক ক্রিকেটার ডেভিড ওয়ার্নারও এদিন রান পেয়েছেন। অধিনায়ক ফিঞ্চ ব্যক্তিগত ১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে গেলে শুরু থেকে অজি ইনিংসের হাল ধরেন ওয়ার্নার। বিস্ফোরক ওয়ার্নারের ব্যাটে এদিন একটি ছক্কা দেখা না গেলেও ৫টি চারের সাহায্যে আসে ৪৩ রান (৫৫ বলে)। ইংল্যান্ডের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সামনে অন্যরা অবশ্য এদিন ৩০ রানের কোটার মধ্যেই ঘোরাফেরা করেন।
শন মার্শ ও অ্যালেক্স ক্যারি ৩০ রানের বেশি তুলতে পারেননি, উসমান খাজা ৩১ রান করে ফিরে যান, স্টয়নিস করেন ১৩ রান।
ইংল্যান্ডের হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে সেরা বোলিং লিয়াম প্লাঙ্কেটের। অন্যদের মধ্যে মার্ক উড, টম কারেন ও লিয়াম ডসন একটি করে উইকেট নেন।
বিশ্বকাপের এই প্রস্তুতি ম্যাচ জিততে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন হয় ২৯৮ রান। স্মিথের ক্যাচ মিসের কারণে ওপেনিংয়ে ৩৯ রানের জুটি পায় ইংলিশরা। ভালো করতে পারেননি জনি বেয়ারস্টো (১২) ও বেন স্টোকস (২০)। তবে জেমন ভিন্সের ৭৬ বলে ৬৪ ও জস বাটলারের ৩১ বলে ৫২ রানের কুইক ফিফটি দলকে পথে ফিরিয়েছিল।
কিন্তু দরকারী সময়ে উইকেট তুলে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা ম্যাচের লাগাম হাতেই রাখেন। মঈন আলি (২২) ও প্লাঙ্কেটকে সঙ্গে নিয়ে ভালো চেষ্টা করেন ক্রিস ওকস। ২৭৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪০ রানে তিনি রানআউট হয়ে গেলে আশা শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। শেষদিকে প্লাঙ্কেট (১৯) ও আদিল রশিদ চেষ্টা করলেও দলকে রক্ষা করতে পারেননি। তিন বল বাকি থাকতে ১২ দূরে থামে তাদের রথ।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জেসন বেহরেনডোর্ফ ও কেন রিচার্ডসন দুটি করে উইকেট নেন। এছাড়া নাথান কোল্টার-নাইল, অ্যাডাম জাম্পা ও নাথান লায়ন একটি করে উইকেট নেন।
শেষ ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে ২৭মে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। একইদিনে ইংল্যান্ড খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।