ব্যাট হাতে দলকে এনে দিয়েছেন দারুণ এক সংগ্রহ। খেলেছেন সর্বোচ্চ ৮৯ রানের ইনিংস। বল হাতেও দারুণ উজ্জ্বল বেন স্টোকস। নিয়েছেন দুটি উইকেট। ব্যাটে-বলে অগ্রণী থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ফেভারিটের মতো এক জয়ের পথ দেখালেন এ অলরাউন্ডার। হয়েছেন ম্যাচসেরা।
বৃহস্পতিবার ওভালে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০৪ রানের বিশাল জয় পেয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ইংলিশদের ৩১১ রানের বিপরীতে ২০৭ রানে অলআউট হয়েছে প্রোটিয়ারা।
বড় লক্ষ্য, শুরুটাও হওয়া চাই মজবুত। সেই লক্ষ্যে শুরুতেই আঘাত পায় সাউথ আফ্রিকা। চতুর্থ ওভারেই জফর আর্চারের বাউন্সারে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়াদের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা হাশিম আমলা।
আমলার বদলে নেমে বেশিক্ষণ উইকেটে থিতু হতে পারেননি এইডেন মার্করাম। ১১ রানের করে সেই আর্চারের বলেই স্লিপে ধরা পড়েন জো রুটের হাতে। সাউথ আফ্রিকার সংগ্রহ তখন সবে ৩৬।
দুই সতীর্থকে হারিয়ে সাবধানে দলকে টানতে থাকেন কুইন্টন ডি কক। দেখা পান নিজের ২১তম ফিফটিরও। তাকে ফিরিয়ে ইংলিশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান পেসার লিয়াম প্লাঙ্কেট। অন্যপ্রান্তে আর্চার তোপে আগেই ফিরেছেন অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস।
ডি কক ফিরলে আস্তে আস্তে দলকে টানতে থাকেন ফন ডার ডুসেন। ভয়ঙ্কর আর্চারের বলে মঈন আলিকে ক্যাচ দিয়ে থামে তার ৫০ রানের প্রতিরোধও।
ডুসেন ফেরার পর থিতু হতে পারেননি আর কোনো প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। ব্যথা নিয়ে আমলা নেমেছিলেন আবারও, কিন্তু প্লাঙ্কেটের বলে ইংলিশ উইকেটরক্ষক বাটলারের হাতে ধরা পড়েন কেবল ১৩ রানে।
শেষদিকে আন্দিলে ফেলুকোয়ও আর ইমরান তাহিরের উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের লেজ মুড়ে দেন স্টোকস। ১০ ওভার বাকি থাকতেই থামে সাউথ আফ্রিকা।
স্টোকস ২টি, প্লাঙ্কেট ২টি, আর্চার ৩টি, রশিদ ও মঈন নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
ওভালে শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল ইংল্যান্ডও। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম বলটি প্রথমবারের মতো কোনো স্পিনারকে দিয়ে করানোর নজির গড়েন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস। ইমরান তাহিরের হাতে বল তুলে দেন। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই রানের খাতা খুলতে না পারা জনি বেয়ারস্টোকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে আস্থার প্রতিদান দেন তাহিরও।
তারপরও জেসন রয়, জো রুট, ইয়ন মরগান ও বেন স্টোকসের ফিফটিতে তিনশ পেরোনো সংগ্রহ গড়েছে ইংল্যান্ড।
দুটি শতরানের জুটি আসে। প্রথমটি আসে রয় ও রুটের ব্যাটে। দুজনে যোগ করেন ১০৬ রান। দুজনেই ফিরেছেন ফিফটি পার করেই। ৮ চারে ৫৩ বলে ৫৪ রানের ইনিংস রয়ের। ৫ চারে ৫৯ বলে ৫১ রানের ইনিংস রুটের। দুজনেই দ্রুত আইট হন ফিফটি করে।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে অবশ্য ভেঙে পড়েনি স্বাগতিকরা। আরেকটি শতরানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামলান মরগান ও স্টোকস। এই জুটিও ঠিক ১০৬ রানের। মরগানের বিদায়ে ভাঙে। ফেরার আগে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৬০ বলে ৫৭ রানের ঝলমলে ইনিংস আসে অধিনায়কের থেকে।
চার ফিফটির বড়টি স্টোকসের। ৯ চারে ৭৯ বলে ৮৯ রানের। এগারো রানের জন্য শতক হাতছাড়া করেছেন এ অলরাউন্ডার। পরে জস বাটলার ১৮ ও ক্রিস ওকসের ১৩ রানে তিনশ পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
প্রোটিয়াদের মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা লুনগি এনগিডি, যদিও খরচ করেছেন ৬৬ রান। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাহির ও কাগিসো রাবাদা, যথাক্রমে ৬১ ও ৬৬ করে রান খরচ করে। ৮ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ফেলুকোয়ও নিয়েছেন একটি উইকেট।