একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গতকাল সোমবার বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের উপর সর্বোচ্চ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিন ছিলো। হামলা করে, গুলি করে বিএনপি প্রার্থীদের রক্তাক্ত করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
‘‘আর এই দিনই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে।’’
রিজভী বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতা মওদুদ আহমদের গাড়িতে ভয়ঙ্কর হামলা করা হয়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান তিনি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের ওপর গতকালও সশস্ত্র হামলা হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনের উপর আবারও হামলা করা হয়েছে।
‘‘ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর উপর হামলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে ধানের শীষর প্রার্থী মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান ও শরীফুল আলমের উপর গুলি চালিয়েছে পুলিশ। তাদের শরীরের পরিধেয় রক্তে ভিজে গেছে।’’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপুর প্রচারণায় সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত ও মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে চিকিৎসার জন্য। তার অবস্থা গুরুতর।
‘‘শেরপুরে ধানের শীষের প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকার উপর হামলা করা হয়েছে। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। বরিশালে সরদার সারফুদ্দিন আহমেদ সান্টু হামলায় আহত হয়েছেন। এছাড়াও হামলার শিকার হয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী জয়নুল আবদীন ফারুক, ফজলুল আজিম, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সেলিম রেজা হাবিব , আজহারুল ইসলাম মান্নান ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। গত এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার-১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমেদ অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। সন্ত্রাসীরা গোটা এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’’
গতকাল একদিনেই ২৮টি আসনে বিএনপির প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের উপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সেনাবাহিনী নামার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সেটি হয়নি। তবে আমরা এখনও আশাবাদী। আশা করবো, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, ভোটের ময়দান ফাঁকা করতেই ধানের শীষের প্রার্থী ও সমর্থকদের উপর সশস্ত্র হামলা চলছে। সারাদেশে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যারা মানুষকে নিরাপত্তা দিবে সে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীই মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। সারাদেশে এখন ভয়ংকর আতঙ্কের নাম পুলিশ-র্যাব-বিজিবি। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন সিইসিসহ কতিপয় কমিশনার।