কোমরে গুজে রাখা সেলাই মেশিনের একটি ববিন দেখেই লাশ হয়ে থাকা বিল্লাল হোসেনের পরিচয় নিশ্চিত করলেন স্বজনরা। ববিনের সূত্র ধরেই স্বজনরা তার লাশ চিহ্নিত করেছেন। যে লাশটিকে এসহাকের লাশ বলে দাবি করেছিল অন্য এক নিহতের পরিবার।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ঢাকা মেডিকেলের মর্গ থেকে চকবাজারের আগুনে পোড়া মানুষের লাশ বুঝে নিচ্ছিলেন স্বজনরা। মর্গের পাশে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পে থাকা নাম্বারিং করা লাশের ছবি দেখে হঠাৎ দুটি পরিবার দাবি করে ৬৩ নম্বর ছবির লাশটি তাদের। সেই সাথে তারা অঝোরে কাঁদতে থাকেন।
এসময় পুলিশ সদস্যরা আবার মর্গে গিয়ে লাশ দেখে আসতে অনুরোধ করেন স্বজনদের। এসময় কামরাঙ্গীরচরের নিহত ভ্যান চালক এসহাকের বোন হাসিনা বেগম দাবি করেন ৬৩ নম্বর ছবির লাশটি তার ভাই এসহাকের।
তবে এসময় মদীনা ডেকোরেটরের সেলাইয়ের কাজ করা নিহত বিল্লাল হোসেনের স্বজনেরা দাবি করেন লাশটি তাদের। যেহেতু লাশের ছবি দেখে একেবারেই চেনা যাচ্ছিল না তাই পুলিশ দুই পরিবারের লোকদেরই আবার মর্গে গিয়ে লাশ দেখে আসতে বলেন।
কিছুক্ষণ পর বিল্লাল হোসেনের পরিবারের স্বজনদের সাথে থাকা মোঃ এরশাদ পুলিশকে বলেন ৬৩ নম্বর ছবির লাশই বিল্লাল হোসেনের। কারণ মর্গে গিয়ে তার কোমরের লুঙ্গিতে গোজা একটা সুতার ‘ববিন’ পাওয়া গেছে। তিনি তো ডেকোরেটরের দোকানে তাবু পর্দার কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতেন।
আর এরই মধ্যে নিহত ভ্যানচালক এসহাকের বোন হাসিনা বেগম এসে পুলিশকে বলেন, ৬৩ নম্বর লাশ আমাদের না। ৫৬ নম্বর লাশ আমাদের। ৫৬ নম্বর ছবির লাসটা আমরা মর্গে গিয়ে চিনেছি।
এরপরই পুলিশ সদস্যরা এই দুই লাশ শনাক্তের কাগজ তৈরি করে তা মর্গে পাঠান বুঝে নেয়ার জন্য।
রাজধানীর চকবাজারে ওই ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ৭৮-এ দাঁড়িয়েছে। দগ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক।
নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৬৬ জন, নারী ৭ জন ও শিশু ৫ জন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে দগ্ধ ৯ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি, একজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
বুধবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।