স্টার্টআপদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার আয়োজনে শুরু হওয়া আইডিয়াথন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে পাঁচ দল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ‘লেটস স্টার্ট ইউ আপ’স্লোগানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় আইডিয়া প্রকল্পের একটি অন্যতম উদ্যোগ হল বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া এর যৌথ-আয়োজন ‘আইডিয়াথন’ কনটেস্ট।
আজ মঙ্গলবার এই কনটেস্টের বিজয়ী সেরা পাঁচ বাংলাদেশি স্টার্টআপকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ছয় মাসের প্রশিক্ষণের আওতায় কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) কর্তৃক আয়োজন করা হয় “বাংলাদেশ ফ্রন্টিয়ার স্টার্টআপস্ বিজনেস প্রিপ্যারেশন সাপোর্ট” শীর্ষক ভার্চুয়াল ডেমো ডে সিরেমনি।
আয়োজনে বিজয়ী হয়ে প্রথম স্থান লাভ করেছে এএনটিটি রোবোটিক্স লিমিটেড, দ্বিতীয় রক্ষী লিমিটেড, তৃতীয় চার ছক্কা লিমিটেড, চতুর্থ কৃষিয়ান ও পঞ্চম ছবির বাক্স।
এ প্রতিযোগিতা ও বিজয়ী ০৫ টি স্টার্টআপের ১০জন তরুণ উদ্যোক্তাকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬ মাসের প্রশিক্ষণ প্রদানের যাবতীয় খরচ বাবদ প্রায় ৪ কোটি টাকা অর্থ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় আইডিয়া প্রকল্প হতে বহন করা হয়েছে।
আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হোন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগেরপ্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই কর্মসূচি আয়োজনের জন্য মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কেপিসি এবং বাংলাদেশ ফ্রন্টিয়ার স্টার্টআপস্ বিজনেস প্রিপ্যারেশন সাপোর্ট প্রজেক্টকে ধন্যবাদ জানান যা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের আরেকটি মাইলফলক যোগ করেছে।
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার একটি ভিশন শেয়ার করেন। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বরং এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক বাস্তবতা।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে যাতে নন-গ্র্যাজুয়েট যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরকে লক্ষ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট এবং থিসিস বা রিয়েল লাইফ প্রোডাক্ট সেবার গবেষণাপত্র চালু করে যাতে আমরা বাজারে নতুন ও উপযুক্ত উদ্ভাবন আনতে পারি এবং একাডেমিয়া থেকে শিল্পের মধ্যে একটি নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ তৈরি করতে পারি সেই প্রচেষ্টাও চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন বলেন, বাংলাদেশী স্টার্টআপ যারা এই প্রোগ্রামে যোগদান করেছে তারা সফলভাবে প্রোগ্রামের প্রত্যাশা এবং প্রাথমিক লক্ষ্যসমূহ পূরণ করেছে।
তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করে আরও জানান, বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ২০০৯ সাল থেকে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে এবং দেশটি দারুণ কাজ করছে। বাংলাদেশ সফলভাবে করোনা মহামারী মোকাবেলা করছে এবং এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। পরিশেষে, মাননীয় রাষ্ট্রদূত আইডিয়াথন বিজয়ী যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় তাদের ছয় মাসের দীর্ঘ প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন তাদের অভিনন্দন জানান।
অনলাইন এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন এবং বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
অনুষ্ঠানটিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দক্ষিন কোরিয়ার কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) এর চেয়ারম্যান আন ওয়াং-জি। এছাড়া, এই আয়োজনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব পার্থপ্রতিম দেব, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যুগ্ম-সচিব মো. আব্দুর রাকিব।