মাত্র কদিন আগেই বিশ্বের তিন নোবেল বিজয়ী নারী বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের অসহনীয় কষ্টের কথা জেনে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা সবাই শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সূচির ভূমিকায় হতাশ হয়েছেন। তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে তারা বলেছেন- রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যথাযথ ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণমাধ্যম নিজ নিজ দেশের সরকারের অবস্থান অনুযায়ী সংবাদ প্রকাশ করেছে। সে কারণে এই শতাব্দীর বর্বরতম একটি অধ্যায় বিশ্বের অনেকের কাছে অজানা থেকে গেছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি বলেছেন নোবেল বিজয়ী ম্যারেইড ম্যাগুয়ার। তিনি বলেছেন, যুক্তরাজ্য সরকার মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রচুর অর্থ দিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে মিয়ানমার সমরাস্ত্র কিনেছে। সেনাবাহিনীর শক্তিমত্তা আরও বাড়িয়েছে। তা দিয়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গা নিধন করেছে।
সম্প্রতি দেখলাম বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তের ওপারে দেড় শ’ গজের মধ্যে ভারী অস্ত্রসহ অতিরিক্ত সেনাসমাবেশ ঘটিয়েছে মিয়ানমার। এর ফলে ওই সীমান্তের আশ্রয় নেয়া পাঁচ হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনার পর আমাদের সরকার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানিয়েছে। দু দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে। এটা কিসের আলামত? এই আলামত কি প্রমাণ করে না যে, মিয়ানমার সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের দেশে থাকতে দেবে না? যারা ওই সীমান্তে এখনো ফিরে যাবার আশায় দিনাতিপাত করছে তাদেরকে বাঙালি বলে বাংলাদেশে চলে যাবার জন্য ভয় দেখাচ্ছে?
ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইন অঞ্চলকে রোহিঙ্গামুক্ত করার জন্য নানাভাবে কৌশলে সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বিদায় করেছে। তারা যতই বৈঠক করুক নানা চাপে পড়ে, সেগুলো কার্যত কোনো লাভ হবে বাংলাদেশের।
এমতাবস্থায় আমাদেরকে যারা বন্ধু বলে প্রচার করে, তাদের সাথে নিয়ে বিশ্ব অঙ্গনের মোড়লদের দৃষ্টিগোচর করা যে, মিয়ানমারের এই সীমান্তে সেনাসমাবেশ মানে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা। সুতরাং দ্রুত এই শক্তি প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবার ব্যাপারে কার্যকর জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)