রাজশাহীর বাঘা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আক্কাস আলীকে হারিয়ে বিএনপির প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক জয়ী হয়েছেন। তবে কাউন্সিলর পদে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের বেশি সংখ্যক প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এই নির্বাচনে বিজয়ী সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি মো. শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন।
ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন: দুঃখজনকভাবে এই ভোটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ত্যাগী, পোড় খাওয়া, পরীক্ষিত, নিবেদিত, দুর্দিনের রাজপথের সৈনিক আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাছ আলী সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু ১২ জন কউন্সিলরদের মধ্যে আওয়ামী লীগেরই ৮ জন নির্বাচিত হয়েছেন। আমি জয়ী সকলকে অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন: বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের দুর্গ, ভবিষ্যতেও তা থাকবে এতে কোন সন্দেহ নাই। তারপরও আমাদের মেয়র প্রার্থীর পরাজয়ের বড় কারণ হলো উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কিছু নেতাদের কাউন্সিলর ভোটে সম্পৃক্ত হওয়া। পাশাপাশি গুটিকয়েক নেতার ব্যক্তি স্বার্থও এই নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। ১২ বছর মেয়র পদে থেকে এবং দীর্ঘ সময়ের মামলা এই নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। নির্বাচনে প্রার্থীর জয় পরাজয় নির্ভর করে প্রার্থী এবং দলের নেতাকর্মী উভয়েরই তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডের উপর। এই পরাজয়ের দায়ভার কেউ এড়াতে পারবে না।
‘শুরু থেকেই বাঘা পৌরসভার এই নির্বাচনটি এই সময়ে বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে হওয়া নিয়ে কিছুু মানুষের মধ্যে আশংকা ছিল। কিন্তু বাঘাবাসীর জোরালো দাবীর প্রতি সম্মান রেখেছি বলেই আমি স্থানীয় সাংসদ এবং মন্ত্রী হয়েও নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়াইনি।’
তিনি বলেন: পূর্ব থেকেই প্রার্থী এবং দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ও আস্থাহীনতা বিদ্যমান ছিল। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এবং এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দেরিতে হলেও বাঘা আওয়ামী লীগ একত্রিত হয়েছে। যতটা সমন্বিতভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে কাজ করা উচিত ছিল তার সময় ও সুযোগ পাওয়া যায়নি বলেও হয়তো আমরা মেয়র হারিয়েছি। ভোটের আগের রাতেও আমি বাঘার গুরুত্বপূর্ণ ৫ জন নেতার কাছ থেকে আগাম ভোটের হিসাব নিয়েছিলাম। সেখানেও আমি জয় নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম। প্রার্থীর পক্ষ থেকেও কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যা এখানে বলতে চাই না।
‘আক্কাছ আলী মেয়র থাকাকালীন এই পৌরসভাকে তৃতীয় শ্রেনী থেকে প্রথম শ্রেনীত উন্নীত করেছেন। তার সময়েই বাঘা পৌরসভা প্রায় ৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ পেয়েছে এবং অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। আমাদের প্রার্থী পরাজিত হলেও পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আক্কাছ আলীর রাজনীতি আরও বেশি জোরালো হবে বলে আমি মনে করি। পোড় খাওয়া এই নেতার এমন অভিজ্ঞতা নতুন নয়। অতীতে তিনি পরাজিত হয়েও গণমানুষের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং দুর্দান্ত মনোবল নিয়ে ভোটে জয়লাভ করেছেন।’
শাহরিয়ার আলম বলেন: এই পরাজয়ে অনেকের কাছেই অনেক প্রশ্নের উদয় হতে পারে। কিন্তু সংঘবদ্ধ আওয়ামী লীগ যে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী তা নতুন করে প্রমাণের কিছু নাই। তবে এই ফলাফল নিয়ে নেতৃবন্দের সাথে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।